আজ-  ,


সময় শিরোনাম:

আধুনিক বিশ্বে ইসলামের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দারুল উলুম দেওবন্দকে আল্লাহ কবুল করেছেন: গোয়াইনঘাটের সমাবেশে বক্তারা ★

 
আধুনিক বিশ্বে দ্বীনে মিল্লাত ও ইসলামের সার্বিক দিক দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দারুল উলুম দেওবন্দকে আল্লাহ কবুল করেছেন। ইসলাম কিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকবে এর দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নিয়েছেন। সময়ের প্রয়োজনে আধুনিক এই পৃথিবীতে আল্লাহ দারুল উলুম দেওবন্দকে দিয়ে ইসলামের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কবুল করেছেন।১৫ এপ্রিল (সোমবার) দুপুর ১২টা থেকে- গোয়াইনঘাট শহীদ মিনার মাঠে, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ গোয়াইনঘাট উপজেলা শাখা আয়োজিত আকাবিরে দেওবন্দের রাজনৈতিক কর্মপন্থা শীর্ষক আলোচনা সভা, নবীন আলেম ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সংবর্ধনা ও ছাত্র সমাবেশে অনুষ্ঠানে অতিথিরা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। 
শাখা সভাপতি ইকরামুল হক জাবেরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মাহফুজ, বাহা উদ্দিন বাহার,জাকির হুসাইন ও আব্দুল্লাহ সালমানের যৌথ পরিচালনায় বিশাল এই ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি মুফাক্কিরে ইসলাম শায়খ জিয়া উদ্দিন বলেন, সমাজে গুণীদের সম্মান করলে গুণীরা জন্মায়। দেশের আগামীর প্রজন্মদের উৎসাহ উদ্দীপনা দিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার দরকার আছে। তিনি বলেন, দেশের যেকোনো সঙ্কটাবস্থায় ইসলামের প্রয়োজনে জমিয়ত সারাদেশে মাঠে-ময়দানে কথা বলে, জনগণের অধিকারের কথা বলে। 
ছাত্র সমাবেশে প্রধান আলোচক জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইতিহাসবিদ ও হাদীস বিশারদ উবায়দুল্লাহ ফারুক কাসেমী বলেন, আধুনিক বিশ্বে দ্বীনে ইসলামের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দারুল উলুম দেওবন্দকে আল্লাহ কবুল করেছেন। ১২’শ বছর মুসলমানরা পৃথিবীর ব্যাপক যায়গা নিয়ে হুকুমত চালায়। এর পূর্বে কোনো জাত-ধর্ম-বর্ণ এতো দাপটের সাথে দীর্ঘসময় শাসন করেনি। ইসলামী হুকুমতের সময় মানুষের জান-মাল-ইজ্জত আভ্রু হেফাজতে ছিল। যখন থেকে ইউরোপীয়রা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে লাগলো, তখন থেকে পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে লাগলো। তিনি বলেন, বৃটিশরা যখন ভারতবর্ষে তাদের শাসন চালাতে লাগলো, তখন তারা এদেশের নীল চাষ বন্দ করলো, চিরচেনা শিক্ষা কারিকুলাম বন্দ করে দিয়ে তাদের শিক্ষা-দীক্ষা চালু করলো। তখন নতজানু পরিস্থিতিতে দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে যখন ১৯১৯ সালে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের যাত্রা শুরু হয়, তখন ২য় অথবা ৩য় ওয়ার্কিং মিটিংয়ে ১৯২০ সালের মে মাসে রেজুলেশন হয় ভারতবর্ষ বৃটিশদের হাত থেকে স্বাধীন করতে হবে। এরপূর্বে কোনো রাজনৈতিক বা সামাজিক সংগঠন স্বাধীনতার কথা বলেনি, অধিকার আদায়ের কথা বলেছে। সময়ের পালাবদলে অন্যান্য সংগঠনগুলো জমিয়তের সাথে হাত মিলায় এবং ১৯০ বছরের শোষণ থেকে ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে। তিনি দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে বলেন, বর্তমানে দুধের বাচ্চা থেকে নিয়ে সব শ্রেণী পেশার মানুষ পাকিস্তান থেকে মাত্র ২৩ বছরের অনাধিকার থেকে স্বাধীন হওয়ার দিন তারিখ সময় পর্যন্ত মুখস্থ বলতে পারে, কিন্তু ১৯০ বছরের শোষণ থেকে বিদেশিদের ধূসর থেকে স্বাধীন হওয়ার কোনো ইতিহাস চর্চা হয় না। পাঠ্যসূচিতেও এই ইতিহাস তুলে ধরা হয়নি। কাসেমী শিক্ষা ব্যাবস্থা নিয়েকথা  বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের শিক্ষা কারিকুলামের যে অবস্থা, আগামীর প্রজন্মরা পঙ্গু হওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না। আমরা এই শিক্ষা ব্যাবস্থা নিয়ে অনেক মাতামাতি করেও ফায়দা হয়নি, বিধায় আমরা নিজ উদ্যোগে জেনারেল ও দ্বীনি শিক্ষার সমন্বয়ে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান ব্যাপকহারে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তা না হলে আমাদের সন্তানরা একটা লাবড়া জাতি হয়ে গড়ে উঠবে। 
ছাত্র সমাবেশে মুখ্য আলোচক লেখক, গবেষক কবি মূসা আল হাফিজ বলেন, সেকুলার রাজনীতি বড় বড় করে অধিকার আদায়ের কথা বললে আদৌ আমাদেরকে অধিকার দিতে পারেনি। স্বাধীনতার ৫২ বছর হয়ে গেছে, সেকুলার রাজনৈতিক সংগঠনগুলোই সরকার গঠন করে আসছে এখন পর্যন্ত, পরিসংখ্যান করে দেখেন এদেশে এখন পর্যন্ত শিক্ষা-কৃষি-শিল্প কোনো দিক দিয়ে আমাদের পরিপূর্ণ হক আদায় করতে পারেনি। অর্ধশত বছরে এসে বুঝতে বাকি থাকেনি ইসলামী রাজনীতির কতটুকু গুরুত্ব। বিশেষ করে এই মেঘালয় ঘেসা সীমান্ত এই অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ইসলামী রাজনীতির চর্চা হওয়া দরকার। 
ছাত্র সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা কাওছার আহমদ, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- ছাত্র জমিয়তের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় যুব জমিয়তের সভাপতি তাফহিমুল হক, সিলেট জেলা উত্তর জমিয়তের সভাপতি আতাউর রহমান কোম্পানীগঞ্জী, দক্ষিণ জমিয়তের সভাপতি মুফতি মুজিবুর রহমান, উত্তর জেলা জমিয়তের সিনিয়র সহ-সভাপতি নূর আহমদ কাসেমী, সাধারণ সম্পাদক এবাদুর রহমান কাসেমী, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি এখলাছুর রহমান রিয়াদ, গোয়াইনঘাট উপজেলা জমিয়তের সভাপতি নুরুল ইসলাম বৌলগ্রামী, সাধারণ সম্পাদক ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম আম্বিয়া কয়েছ, কানাইঘাট লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জমিয়ত নেতা মাওলানা জামাল উদ্দিন প্রমুখ।