জীবন থেমে নেই
-সৈয়দা শিরিন আক্তার
ঘড়ির কাঁটা থেমে নেই। প্রতিটি মুহূর্তই জীবন থেকে একটি একটি করে সেকেন্ড হাঁরিয়ে যাচ্ছে। যারা সেকেন্ড ধরে ধরে জীবনকে রাঙাতে পারে তারাই একসময় সাফল্যের শীর্ষে পা রাখে। প্রতিটি মূহুর্তকে রাঙিয়ে জীবনকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই সংগ্রাম। সেই সংগ্রামের গল্প মানুষ আর মননভেদে নানা রকম। একেক জনের গল্প একেক রকম হলেও সবার জীবন সামনে এগিয়ে চলেছে। কেউবা ধীরে, আবার কেউ বা দ্রুত… সবাই সামনে এগুনোর প্রচেষ্টায় প্রহর গুনছে। জীবন থেকে কিছু বাস্তব শিক্ষা নিতে পারি।
জীবন সবসময়ই সচল। আপনি আমি যে কর্মস্থলে কাজ করছি, ভাবছি আপনি আমি ছাড়া আর সব-ই অচল। আসলে কিন্তু না। আপনি আমি যদি কাজ ছেড়ে দেই, তাহলে সেই কর্মস্থলে সাময়িক সমস্যা তৈরি হবে। কিন্তু খুব দ্রুত আপনার আমার উপস্থিতি সবাই ভুলে যাবে।
তেমনি আজ আপনি হয়তো সর্বমহলে বেশ জনপ্রিয়। আপনাকে ছাড়া কোনো আড্ডাই জমে না। জেনে রাখুন, আপনি আমি না থাকলেও আড্ডার রং কোনো অংশেই মলিন হবে না।
কোনো কিছুই জীবনে চিরস্থায়ী নয়। আবেগ, অনুযোগ কিংবা অভিযোগ… কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। সামাজিক সম্পর্কগুলো সবসময়ই এক রকমের গাঢ় হবে না। আজ আপনার কাছে যাকে ভালো লাগছে, কালকে তাকে আপনার ভালো না ও লাগতে পারে। আজ যিনি প্রশংসা করছেন, কাল তিনি আপনার কঠোর সমালোচক হতেই পারেন।
আপনি নিজেকে কখনই অন্যদের সঙ্গে তুলনা করবেন না। নিজেকে নিজের সঙ্গে তুলনা করতে শিখুন। ধার করার অভ্যাস কিংবা ঋণে নিজেকে জড়াবেন না। চেষ্টা করুন নিজের হাতে আয় করতে। যতটা আয় করবেন, তা বুঝে ব্যয় করতে শিখুন। মনে রাখবেন, শুধু পরিশ্রমেই জীবনের সাফল্য আসে না। পরিশ্রমের সঙ্গে বুদ্ধিবৃত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সৃজনশীলতাকে যোগ করতে হয়।
বছরের পর বছর একই কাজ করতে করতে জীবনকে কখনোই একঘেয়েমির বৃত্তে আটকে ফেলবেন না। সিদ্ধান্ত নিয়ে ঝুঁকি নিতে শিখুন। ঝুঁকি নেওয়ার একটা সুবিধা হচ্ছে আপনি জানেন না সামনে কী আসবে। এই অচেনা আর অজানা পথ সামনে নতুন দ্বার খোলে দেয়।
অন্যের মতামতকেই জীবনের সব বলে ভাববেন না। একই বই কারো কাছে ভালো লাগতে পারে, আবার কারো কাছে খারাপ বা অসহ্যও লাগতে পারে। তেমনি আমার কাজ কারো কাছে ভালো লাগতে পারে, কারো কাছে খারাপ লাগতে পারে। সব সময় নিজের সঙ্গেই বোঝাপড়ার মাধ্যমে কাজ করতে হয়।
০২-১২-২০২৩ইং, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
অনুলিখনঃ স’লিপক।
সৈয়দা শিরিন আক্তারঃ সভাপতি- বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা।