আমান উদ্দিন এর ৬টি কবিতা
মানুষ ও অমানুষ
মানুষ ও অমানুষের আকৃতি অবয়ব দেখতে সমান
অমানুষ হয়ে থাকে বহুরূপী আচরণে হয় প্রমাণ।
হিংস্রতায় পরিপূর্ণ থাকে সকল অমানুষের মন
মানুষের উপর নির্দয় আক্রমণ করে যখন তখন।
মানুষ কভু জন্মায় না অমানুষ রূপ ধারণ করে
মানুষের খারাপ কৃতকর্মে চরিত্রে অমানুষের রূপ ধরে।
অমানুষ সদায় সর্বক্ষেত্রে থাকে লোভী ও স্বার্থপর
তার কাছে সম্পর্কের মূল্য নাই কে আপন কে পর।
স্বার্থের নেশায় হিংস্র অসুররূপী অমানুষের প্রকৃতি
অমানুষের প্রেতাত্মা করে মহৎ মানুষের ক্ষতি।
মানুষের সফলতা সহ্য করতে পারে না অমানুষ
অহেতুক সমাজে রটায় ভালো মানুষের দোষ।
সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ হয়ে করো না অমানুষের আচরণ
চরিত্র হতে উপড়ে ফেলো নিকৃষ্ট অমানুষের আবরণ।
২৪ এপ্রিল ২০২৪ইং, লন্ডন, যুক্তরাজ্য।
++++++++++++++++++++++++
পরোপকার
পরোপকার করো যদি জীবনে হবে মহীয়ান
মহান খোদাতালাহ দেবে তার অমূল্য প্রতিদান।
পরোপকারীকে ভালোবাসেন জগৎস্রষ্টা প্রভু
সৃষ্টিকর্তা প্রিয় বান্দাকে পাপ দেন না কভু।
জীবনটাকে যদি উৎসর্গ করো মানব কল্যাণের তরে
আল্লাহ্পাক উত্তম পুণ্যে ঝুলি দেবেন ভরে।
পরোপকারে যত করবে নিজকে সত্যিকার আত্মদান
খোদার রহমত বর্ষিত হয়ে পাবে পাপ থেকে পরিত্রাণ।
সৃষ্টি জগতের সেরা মানবজাতি বিবেক বুদ্ধিমান
মানুষের মধ্যেই নিহিত রয়েছে পরোপকারের জ্ঞান।
জীবদ্দশায় পরোপকারে বিলিয়ে দিলে ক্ষণিকের জীবন
স্বর্গীয় স্থায়ী নিবাস দেবে খোদা যখন হবে মরণ।
২১ এপ্রিল ২০২৪ইং, লন্ডন, যুক্তরাজ্য।
++++++++++++++++++++++++
সোনার বাংলাদেশ
সাম্যমৈত্রী আর বন্ধুপ্রতিম নৈসর্গিক দেশ
রূপে গুণপ ভরা আমার সোনার বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে নাই জাতি ধর্ম বর্ণ ভেদাভেদ
সাম্প্রদায়িকতায় কভু হয় না ঝগড়া বিভেদ।
হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম খ্রিস্টান একত্রে করে বাস
বাংলাদেশ বর্ণবাদহীন এক শান্তির আবাস।
মসজিদ মন্দির গির্জা ধর্মালয় রয়েছে পাশাপাশি
কভু হয় না ধর্মের বাড়াবাড়ি কিংবা রেষারেষি।
জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সম্পর্ক যেন ভাই ভাই
বর্ণবাদী সংঘর্ষের আজ অবধি কোন নজির নাই।
হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম খ্রিস্টান রয়েছে একই সমাজে
বৈষম্যহীন শ্রদ্ধা ভালোবাসা বিরাজমান সবার মাঝে।
পূজা পার্বণ বড়দিন সব ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান
ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই করে দিয়ে মন প্রাণ।
দুনিয়ায় কোথাও খুঁজে পাবে না এমন কোন দেশ
সাম্যমৈত্রীর অটুট বন্ধনে আবদ্ধ স্বাধীন বাংলাদেশ।
২২ এপ্রিল ২০২৪ইং, লন্ডন, যুক্তরাজ্য।
++++++++++++++++++++++++
হালাল বনাম হারাম
হালাল রোজগারে পেটে ভাত
হারাম জীবিকা পাপের সাথ।
হারাম রোজগার করতে সোজা
জীবনে ভরে শুধু পাপের বোঝা।
হালাল রুজিতে রয়েছে বরকত
হারামে বিনষ্ট করে জীবনরথ।
হালাল খাবার আল্লাহর নেয়ামত
হারামে বিনাশ পরকাল কেয়ামত।
হারামে যত নিজকে করবে আকৃষ্ট,
সৃষ্টিকর্তার তালিকায় হবে পাপিষ্ঠ।
হারামপন্থা পুরোপুরি বালিরবাঁধ
সহসা ধ্বংস জীবনে আসে বিষাদ।
হালাল রুজি করো পাবে বরকত
অবৈধ রোজগার বন্ধে করো শপথ।
হালাল রিযিকের তালাশ করো
সৎ উপায়ে উপার্জনের পন্থা ধরো।
হালালের প্রতি সদায় হলে নির্ভর
মহান আল্লাহ্পাক করবে স্বনির্ভর।
২৩ এপ্রিল ২০২৪ইং, লন্ডন, যুক্তরাজ্য।
++++++++++++++++++++++++
প্রেমের সেকাল-একাল
আগেরকার জামানায় প্রেম করা ছিলো লুকোচুরির খেলা
খুব সহজে হতো না প্রেমিক প্রেমিকার দেখা সাক্ষাৎ মিলা।
পরস্পরের কুশলাদি জানতে চিঠিপত্র হতো বিনিময়
অতি সন্তর্পণে দেখা করতে লাগতো অনেক সময়।
ভালোবাসার ভাব আদান প্রদান হতো অত্যন্ত গোপনে
চাতক-চাতকিনীর মতো দেখা হতো পরস্পরের সনে।
ছিলো না কোন মোবাইল ফোন করতে মধুর আলাপন
প্রেম ভালোবাসা ছিলো বিরহ বেদনা ও যন্ত্রণার দহন।
প্রেমিকা প্রেমিকা সাক্ষাৎ করা হাতের মুঠোয় যেন চাঁদ
দেখা হলে নিমিষেই কেঁটে যেত মনের সব বিরহ বিষাদ।
প্রেমিক জুটির মাঝে সত্যিকার থাকতো মনের টান
একে অন্যের তরে অনায়াসে সপেঁ দিতো হৃদয় মন প্রাণ।
ডিজিটাল পৃথিবীতে প্রেম হয়েগেছে পুরো ছলচাতুরির খেলা
স্মার্টফোনে বহুজনের সাথে প্রেম করে কাঁটানো যায় বেলা।
হোয়াটস্যাপ ফেইসবুক মেসেঞ্জারে হয়ে যায় মর্ডাণ প্রেম
অহরহ প্রতারিত হন প্রেমিক মহোদয় কিংবা প্রেমিকা মেম।
পবিত্র ভালোবাসা নিয়ে অভিনয় করে একে অন্যের সনে
লুকোচুরির দিন শেষ দেখা সাক্ষাৎ হয় প্রতিদিন ক্ষণে।
কখনো প্রতারিত হয় প্রেমিকা মর্ডাণ প্রেমিকের ছলনায়
নারীর অমূল্য সম্পদ সতীত্ব হাঁরায় প্রেমিকের প্রতারণায়।
মর্ডাণ প্রেমিকা ধোঁকা দেয় প্রেমিকের সরলতার সুযোগ নিয়ে
টাকা পয়সা ধন সম্পদ হাতিয়ে নেয় প্রেমের অভিনয় দিয়ে।
কলুষমুক্ত পবিত্র হৃদয় মন রেখে করো প্রেম ভালোবাসা
মোহ লালসার প্রেমের মিলন আগামীর স্বপ্নের করে সর্বনাশা।
২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, লন্ডন, যুক্তরাজ্য।
++++++++++++++++++++++++
মানব কল্যাণ
গরীব দুঃখী বলে কাউকে করো না অবজ্ঞা অবহেলা
তোমার বেলায়ও আসতে পারে সেই নিঠুর বেলা।
চিরদিন কখনো কারো যায় না সমান্তরাল সমান
সৃষ্টিজগতের দিকে দৃষ্টিগোচরে মিলে তারই প্রমাণ।
আজকে ধনীর মসনদে আসীন করছে সবে সম্মান
ধন ক্ষমতার গরিমায় কাউকে করতে নাই অপমান।
মহানুভবতার দৃষ্টিকোণে তাকাও অসহায়দের প্রতি
জীবন মরণ উজ্জ্বল করে দেবে যিনি জগৎপতি।
কারো অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে যদি করো ছল
দুনিয়ায় আসামি না হলেও অনন্ত পরকাল হবে নিষ্ফল।
মানব কল্যাণে যত দেবে ধ্যান হবে ততো দামি
সৃষ্টিকুলের অন্তরের খবর রাখেন মহান স্রষ্টা অন্তর্যামী।
চিরকাল কেহ বেঁচে থাকে না এই নশ্বর ধরণীর তরে
জীবদ্দশায় করলে মানব কল্যাণ অমর মানুষের অন্তরে।
নিজ মনের পেতাত্মা পরিহার করে কলুষমুক্ত করো হৃদয়
রহমত বরকত দিয়ে আল্লাহ্পাক সর্বদা থাকবেন সদয়।
২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, লন্ডন, যুক্তরাজ্য।