মোঃ সোহেলঃ
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ভরাডোবা ইউনিয়নের এক্সপেরিয়েন্স টেক্সটাইল (পাকিস্তানি মিল) এর দূষিত বর্জ্য নদীতে নিষ্কাশনের সিদ্ধান্তে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে ভুক্তভোগীরা মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
জানাযায়, দীর্ঘ প্রায় একযুগ ধরে এক্সপেরিয়েন্স টেক্সটাইলের (পাকিস্তানি মিল) এর দূষিত বর্জ্য ও রঙিন পানির কারণে এলাকার হাজার হাজার একর জমির ফসল বিনষ্ট হচ্ছে। বিক্ষুব্ধ কৃষক কৃষাণীরা বিভিন্ন সময়ে ভালুকা-গফরগাঁও সড়কে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করেন। ভরাডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম তরফদারকে সাথে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন কৃষকরা। মিলের দূষিত বর্জ্য নিষ্কাশনের কারণে ২০০০ একর ধানি জামি অনাবাদি পড়ে আছে। এতে এক যুগ ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ওই এলাকার ৬ গ্রামের কৃষকরা।
মিল কর্তৃপক্ষ ভরাডোবা থেকে ভালুকা থানার মোড় খীরু নদী পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার একটি পাইপ লাইন অপরিকল্পিতভাবে স্থাপন করে, যা পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যায়। এতে ঠিকমতো বর্জ্য পানি খিরু নদীতে না নেমে আশপাশের আরও কয়েকটি এলাকায় ছড়িয়ে পরে। এতে ওই এলাকাগুলোও ফসলহানিতে পড়ে। বর্তমানে খীরু নদিতে নামার পাইপটি অকার্যকর রয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায় ভরাডোবা নতুন বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন পাকিস্তান গামের্ন্টস এর নির্গত বর্জ্য ও রাসায়নিক পদার্থ নিষ্কাশনের জন্য মাটির নিচ দিয়ে পাইপ লাইনের জোড়াতালির কাজ চলছে। বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন ডাচবাংলা ব্যাংকের পাশে খোদাই করে নিচে পাইপ লাইনের মাধ্যমে এসব কাজ চলছে বলে জানা যায়। এটা পাইপলাইনের মাধ্যমে ভূ গর্ভস্হ মাটির নিচ দিয়ে ভালুকা ব্রিজ সংলগ্ন নদীতে যাবে বলে জানান কর্মরত শ্রমীকরা।
এলাকার ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভালুকায় ৩ থেকে সারে তিন লক্ষ মানুষের বসবাস। যদি এই বর্জ্যের রাসায়নিক পানি নদীতে পড়ে তবে এই বিপুল জনগোষ্ঠী হুমকির সম্মুখীন হয়ে পরবে। পরিবেশ বিপর্যয় থেকে শুরু করে আরো নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে। নদী তীরবর্তী অঞ্চলে কৃষি কাজ করা হয়। বোরো, ইরি ধান লাগিয়ে ফসলের জোগান আসে। তাছাড়া এর বিস্তৃর্ণ জায়গা জুঁড়ে রয়েছে মাছের বড়ো ধরনের চালান। এসবে প্রভাব পরবে।
সচেতন নাগরিক সমাজের মনে করেন, দূষিত বর্জ্যের কারণে দীর্ঘ একযুগ ধরে ওই এলাকায় কৃষকরা কোন ফসল ফলাতে পারছে না। বিষাক্ত পানির কারণে জলাশয়ে কোন মাছ নেই। ফসল ও জীববৈচিত্রের এতো ক্ষতিসাধনের পরও বহাল তবিয়তে কারখানাটি চলমান রয়েছে।
যদি পাকিস্তান গামের্ন্টস কর্তৃপক্ষ তাদের বর্জ্য, রাসায়নিক পদার্থ নদীতে নিস্কাশন ব্যতিরেখে নিজেদের কোম্পানিতে ট্রিটমেন্ট প্লান্ট করে বর্জ্য দূষিত পদার্থের ব্যবস্হা করত তবে ভালুকাবাসি আগামীতে সমূহ ক্ষতির হাত হতে রেহাই পেতে পারত।
অনুলিখনঃ স’লিপক