আবদুল বাকী এর ৬টি কবিতা
বই নিয়ে পড়তে বসে
বই নিয়ে পড়তে বসে খেলাধুলা ছেড়ে
একটানা দুই ঘন্টা পড়ে মাস্টারের ধারে।
খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমের আয়োজন
ঘুম ভাঙে মুয়াজ্জিনের আজান যখন।
প্রভাতে উঠিয়া তারা ছুটে কুসুমবাগে
কুঁড়িয়ে আনে ফুল সূর্য উঠার আগে।
জলপান সেড়ে তারা অধ্যায়ণে মন
নয়টা বাজলে পরে বিদ্যালয়ে গমন।
স্কুল হতে ফিরে তারা ক্লান্ত শরীরে
বিশ্রামের পরে ছুটে মাঠে খেলার তরে।
আনন্দে মাতে তারা নানা আয়োজন
সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে লেখা পড়ায় মন।
নিয়ম কানুন মেনে চলে আড্ডাবাজি নাই
মোবাইল নিয়ে নয়গো ব্যস্ত বলে জানাই।
আচার আচরণে ত্রুটি নেই মুরব্বি মাননে
ভবিষ্যত গঁড়ে উঠুক তাদের অনুসরণে।
১৮-০৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।
+++++++++++++++++++++++
দেখা করতে গিয়েছিলাম
দেখা করতে গিয়েছিলাম বহুদিন পরে
দেখা হয়নি প্রথম তার সনে ছিলনা ঘরে।
গিয়েছিল বাজারে বেচতে গাছের সুপারি
আনছে কিনে খাবার জন্য তরি তরকারি।
ঘন্টা দুই পর বাড়ী ফিরিল হাতে সদাই
আমাকে দেখে আনন্দে বুকে দিয়ে ঠাঁই।
হলো কোলাকুলি ঝড়িল অশ্রু জল
বহুদিনের বন্ধুত্ব আজো আছে সফল।
মনে যত কথা ছিল; ছিল দুঃখ বেদনা
স্ববিস্তার আলোচনা হলো পেলাম শান্তনা।
সন্তানাদি ছিল না তাহার একাকি জীবন
গত বছর মারা গেছেন প্রিয়া জরিমন।
তাহার দুঃখে দুঃখি হলাম ফেলে দীর্ঘশ্বাস
আড়ালে ফেলিলাম অশ্রু দিলাম আশ্বাস।
বিদায়কালে কহিলাম তাহারে বন্ধু প্রিয়
ভালো থাকিও বাকি জীবন রেখ কল্পনায়।
১৯-০৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।
+++++++++++++++++++++++
প্রতি নিঃশ্বাসে স্মরি
প্রতি নিঃশ্বাসে স্মরি খোদা তুমি রহমান
তোমার দয়ায় জগৎ সৃষ্টি নীল আসমান।
চারিদিকে দেখি তোমায় রহস্য বিস্ময়
সব দিক তোমার সৃষ্টি; সৃষ্টিতে অক্ষয়।
প্রয়োজনীয় সব কিছু বিনামূল্যে করো দান
তুমি রহমান তুমি রহিম আল্লাহ সুবহান।
খালেক তুমি মালেক তুমি; তুমি গাফফার
অনন্ত অসীম তুমি শেষ বিচারে ক্বাহার।
হায়াত-মউতের মালিক তুমি; তুমি জব্বার
এক মুহূর্ত চলেনা তোমার বীনা দরকার।
আপদে বিপদে শোক দুঃখে সদা এন্তেজার
রিজিকের মালিক দয়া তোমার বেশুমার।
প্রতিদান দিতে হলে আমি নিঃস্ব অসহায়
নিঃশ্বাসের দাম দিবো সাধ্য আছে আমায়?
তৃষ্ণায় পানি দাও অনাহারে দাও আহার
তোমার করুণায় বেঁচে থাকি আমি খাকছার।
২১-০৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।
+++++++++++++++++++++++
ভালোবাসা মনের ব্যাপার
ভালোবাসা মনের ব্যাপার ইচ্ছাই শক্তি
মন যদি পায় প্রশান্তি থাকেনা আপত্তি।
সম্পর্ক গঁড়ার বহুবিধ হতে পারে কারণ
কারো দৈহিক কারো মানষিক কারো বিত্তধন।
মনমালিন্য হলে হতাশায় কাঁটে জীবন
হৃদয়ে বেদনা অনুভব অশ্রু সারাক্ষণ।
মন ভেঙে চুরমার অশান্তি বাঁধে ঘর
জীবনের সুখটুকু তাচ্ছিল্যের শহর।
ভাব যদি হয় পয়দা কভু মনের ভিতর
হাত বাড়িয়ে চিত্তে টানে বিক্ষত অন্তর।
আনন্দ অনুভূতি লাগে দেহ করে রঙিন
ভাগ্যবিপন্ন হলে জীবনটাই হয় সঙ্গিন।
আবেগে জঁড়িয়ে অকালে হাঁরায় সম্ভ্রম
দিশাহীন হয়ে পড়ে পৃথিবীটাই ব্যতিক্রম।
অহরহ দহে অন্তর সারা চিত্তে হাহাকার
কুলহীন হয়ে পড়ে ভালোবাসা সমাচার।
২৩-৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।
++++++++++++++++++++++
নুলোক
নাকে নুলোক কানে দুল হাতে চুঁড়ি
কত সুন্দরী তুমি নাই তার জুঁড়ি।
গলায় চন্দ্র হার মাথায় মুকুট
কোমরে গুজেছ শাড়ী জর্জেট।
হাইহিল জুতা পায়ে ভেনিটি হাতে
চোখে গগস সুন্দরী শোভাতে।
আলতা পায়ে নুপুর বাজে
হেলেদুলে চলন বাহার সাজে।
খিলখিল হাসি মুক্তা ঝরা
নয়নে কাজল আপন হারা।
দুধে আলতা চেহারা ভুলবার নয়
সকলকে ভালোবাসো পর কেহ নয়।
কথায় মধুরতা আছে মায়া মমতা
দিলে দয়া তোমার আছে সরলতা।
নাম চরিতা ঘরে তার বিমাতা
আছে ভালো সুখ দিয়েছেন বিধাতা।
কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।
++++++++++++++++++++++
অবসরে ভাবি বসে
অবসরে ভাবি বসে হাঁরানো দিনের কথা
আনন্দ তৃপ্তি আছে: আছে কষ্ট ব্যথা।
শেয়ার করা যায় না পুষে রাখি অন্তরে
মনে হলে দুঃখ বাড়ে প্রকাশ নয় বিস্তারে।
কত স্মৃতি আনন্দ কত শোক নিরানন্দ
জাগরিত হয় মনে শুনি পতনের দ্বন্দ্ব।
হাসি কান্নায় জীবন দুঃখের পাল্লা ভারি
নীরবে অশ্রু ঝরে নিত্য দিনের আহাজারি।
ইচ্ছা জাগিত মনে হরষে কহিতে দু’কথা
সাহস হতোনা মনে থাকিয়া যেত ব্যথা।
ফ্যাল ফ্যাল করে দেখেছি তাহারে চুপে
পারিনি বলিতে কথা ব্যর্থতার চাপে।
কেমন ছিলাম কেমন হলাম সময়ের ব্যবধান
হাজারো স্মৃতি জমাট বাঁধা আছে বিদ্যমান।
উল্লাস ছিল প্রাণে দৃঢ় চিত্তে বলা তর্জনি তুলে
ধরেছে বয়সে পাক সাহস বুদ্ধি লয় সমূলে।
১৭-০৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।