আজ-  ,


সময় শিরোনাম:

আবদুল বাকী এর ৮টি কবিতা

আবদুল বাকী এর ৮টি কবিতা

খুলে দক্ষিণ দুয়ার

খুলে দক্ষিণ দুয়ার বসি বাতায়নে
হিমেল বাতাস বহে ঘুম নয়নে।
ক্লাস্ত দেহখানা এলিয়ে বিছানায়
নিদ্রায় ডুবে যাই নিবিড় ছায়ায়।

বিভোর ঘুমে স্বপ্ন উল্লসিত প্রাণ
হাতের উপর হাত ছিল কতক্ষণ।
ছোঁয়া লেগেছিল হাতের পরশ
উষ্ণ নিঃশ্বাস পড়েছিল সরস।

গভীর ঘুম অসাড় দেহ চৈতন্যহাঁরা
প্রাণ পায় তৃপ্তি ঠোঁটে লাগে ইশারা।
স্বার্থক দেহমন বৈষ্ণব রাধিকারঞ্জন
সুখ যতটুকু দিয়েছিল প্রভু নিরঞ্জন।
১৭-০৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।

+++++++++++++++++++++++

সেদিন দেখা হলো

সেদিন দেখা হলো অমৃতপুরে বহু বছর পর
উজ্জ্বল হাসি আগের মত ক্ষয় হয়েছে গতর।
টানা বিশ বছর গুজার হলো অমৃতপুরে
নানা কষ্টে জীবন কাঁটে বাঁধভাঙা অন্তরে।

এক সময় ছিল তাহার সাথে অন্তরে ভাব
এক সাথে খেলাধুলা দেখিতাম নানা খোয়াব।
স্কুলে যেতাম দু’জন পায়ে হেঁটে ধরে হাত
ভাব ছিল দু’জনে হতনা কখনো বেহাত।

ভাগ্যের ফেরে চলে যেতে হলো দূর শহরে
পরিশ্রমে সংসার চলে পরিজন অর্ধাহারে।
মাঝে মাঝে হয়না কাজ চিন্তায় বিভোর
সুঠাম দেহখানা ক্ষয় পরিশ্রম কঠোর।

বাড়াতে পারিনি হাতখানা দেখে মায়া হয়
হয়েছে বয়স আমার অবসরে কাঁটে সময়।
ইচ্ছা জাগে মনে ইচ্ছা পূরণ সুদূর পরাহত
দৃষ্টি মেলে দেখি শুধু কষ্ট মনে বিব্রত।
১৫-৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।

++++++++++++++++++++++

বরণে ব্যাপকতা

বরণে ব্যাপকতা করণে বৃথা
সাদর সম্ভাষণ নহে যথাতথা।
মন আবেগী বৃথাই আস্ফালন
নিমিষে ভুলে যাই করণী আপন।

এতটুকু বাড়েনি সাদর সম্ভাষণ
কতযুগ বিদায় নিলো করেনি অর্পণ।
নাচিয়া গাহিয়া করেছিলে বরণ
কিছুদিন পর থাকেনা চিত্তে স্মরণ।

মোদের বাস নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল
হৃদয় কোমল আর সহিষ্ণু ভূমন্ডল।
এখনো মেঘ ডাকে আগের মতন
হয়নি কোনকিছুর পট পরিবর্তন।

মানুষ বেড়েছে প্রচুর ব্যাপক হারে
শিক্ষা দীক্ষায় সমৃদ্ধি উচ্চ হারে।
মায়া মমতা হয়েছে আত্মকেন্দ্রিক
সহিষ্ণুতা হ্রাস উৎকণ্ঠা অধিক।

ঘুর্ণিয়মান পুঞ্জিকা সন আবর্তন
বারো মাসে ফিরে আসা নির্ধারণ।
বাড়ে সংখ্যা চৌদ্দশত একত্রিশ
নবরূপে বরণ নববর্ষ আশীষ।
১৪-৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।

++++++++++++++++++++++

দৃষ্টি পড়িলো

দৃষ্টি পড়িল তাহার উপর আকৃষ্ট হলো মন
থমকে দাঁড়িয়ে যাই, অন্তর করিল বরণ।
এত রূপ! আশ্চর্য হই করি বিধাতা স্মরণ
মনের ভিতর তোলপাড় সৃষ্টি আলোড়ন।

ভাল বাসতে মন চায় এগিয়ে চলে চরণ
জ্ঞান লোপ পায় তৃপ্তির খোঁজে বিচরণ।
কেন মন এমন হয়? বিচলিত সারাক্ষণ
হৃদয় দহে অনলে, প্রকাশ পায় লক্ষ্মণ।

মনে পড়ে তাহার কথা বিবেক শূন্য মন
স্মৃতি পটে ভাসে ছবি, আত্মা জাগরণ।
স্বাদ গন্ধ আহ্লাদ বিবর্জিত আচরণ
উৎকণ্ঠায় কাটে ক্ষণ, বিতৃষ্ণায় মরণ।

হাট বাজারে হয়না বেচাকেনা আশিক মন
এক পলকে মিলে যায় তৃপ্ত প্রয়োজন।
ভালবাসা নৈসর্গিক বিধাতা প্রদত্ত দান
মন পায় তৃপ্তি সুখ মহাজাগতিক জ্ঞান।
১৩-০৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।

+++++++++++++++++++++++

মেহমান এসেছিল

মেহমান এসেছিল ঈদের দিন
রহমত ছিল আল্লাহর
সুন্দর দাম্পত্য জীবন
এক পুত্র সন্তান আদর।

কথাবার্তা আচার আচরণ
অতীব উত্তম ব্যবহার
দিলে গেঁথে আছে বন্ধন
কি সুন্দর সিস্টাচার।

অমায়িক বন্ধুসুলভ আচরণ
অহমিকা নেই অন্তরে
বারবার খুঁটিয়ে দেখি মন
যার প্রশস্তি হৃদয় জুঁড়ে।

টিপটপ পরিচ্ছন্ন জীবন
আহামরি তেমন কিছু নেই
নাড়া দিয়েছে মন
তাদের সাধুবাদ জানাই।

বিকশিত অন্তর মুগ্ধতা পাই
মিলিয়ে দেখিলাম হিসাব
সদ্য ফোঁটা পুষ্প বাসনা-ই
লিপিবদ্ধ অন্তরে কিতাব।
১২-০৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।

+++++++++++++++++++++++

ভালো লেগেছিল

ভালো লেগেছিল বলে পরাণ হেসেছিল
সুপ্ত পরাণে তোমায় কাছে পেয়েছিল।
সুরসুর অনুভূতি হৃদয়ে জেগেছিল
প্রীতি অনুভব প্রাণে উৎকন্ঠা বেড়েছিল।

একাকী প্রাণে বিচলিত মন সদা উদাসী
তোমার সান্নিধ্য টানে অন্তর বিকাশি।
প্রফুল্ল হয় পরাণ নিরালে মুচকি হাসি
তৃপ্তি পায় জীবন হয় যদি সে ষোড়শী।

বিকালের আকাশে উড়ছে বলাকার সারি
সুদূর পাহাড়ে ঝরছে ঝর্ণার জল ধারি।
হৃদয়ে ভেসে উঠে তোমার প্রতিচ্ছবি
ক্লান্ত দেহে প্রকাশ পায় সুখ সুপ্ত সবি।
১১-০৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।

+++++++++++++++++++++++

বসে ছিলাম

বসেছিলাম নদীর কূলে দৃষ্টি ওপার
কি সুন্দর গ্রামখানি দেখতে চমৎকার।
কত সুখে আছে ওরা ঝড় ঝামেলা নাই
এপারে থাকি মোরা কষ্টের সীমা নাই।

ওপারে চাহিয়া দেখি সারি সারি গাছ
সবুজ আবরণে ফুলে ফলে বিরাজ।
ডালে ডালে উড়ে পাখী মধুর সুরে গান
স্তব্ধতা নেমে আসে সাঁঝে শান্ত প্রাণ।

দূর হতে দেখা দৃশ্য পরম অনুভব
অন্তর পায় তৃপ্তি সুখ শান্তি নীরব।
দুঃখ কষ্ট অনুভব করি এপারে বসি
ওপার সুখের রাজ্য মুখে থাকে হাসি।

ওপারে ভোর সকালে ছবির মত গ্রাম
সূর্য উঠা দৃশ্য অপার পুলকিত ধাম।
ছেলে মেয়ে করে খেলা বিকাল হলে
ইচ্ছা হয় চলে যাই সব কিছু ফেলে।
১৬-০৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।

+++++++++++++++++++++++

ভাবছি বসে অবশেষে

ভাবছি বসে অবশেষে মিছাই কি জীবন?
মনের ইচ্ছায় করিনি বৃথা সময় ক্ষেপণ।
দেখেছি চোখে আনন্দের নেশা ভূবন
সে পথ এড়িয়ে চলেছি করিনি বিচরণ।

আনন্দ আহ্লাদ ছিল প্রাণে ছিল উচ্ছ্বাস
চুপ রয়েছি দৃঢ় মনে ইচ্ছা করিনি প্রকাশ।
ভালো কিছু পাবার আশায় ঈশ্বরের ভয়
অতৃপ্ত রয়ে গেল জাগতিক সাধ ক্ষয়।

অবহেলায় সময় কেঁটেছে ছিল গাফলতি
পূণ্যের পাতায় শূন্য জ্বলছে লালবাতি।
দয়ার উপর ভরসা করে তরীতে তুলি পাল
মাবুদ কি সহায় হবেন? আমি দয়ার কাঙাল।

দয়া ছাড়া উপায় নেই, আমি নিঃস্ব অসহায়
পূণ্যের কি বা বুঝি? তুমি আছ সদাশয়।
করুণা তোমার চাই, অন্য কাহার নয়
নিবেদন করি, নতশিরে ভক্তি তোমায়।
১৫-০৪-২০২৪ইং, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা।