আজ-  ,


সময় শিরোনাম:
«» ঢাকায় বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাব ১৬তম জাতীয় সাহিত্য সম্মেলন উদযাপন কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত «» কমলগঞ্জ নৃত্যাচার্য নীলেশ্বর মুখার্জী’র ১৩৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন «» কমলগঞ্জে মণিপুরি বর্ণমালায় পরীক্ষা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা «» কমলগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মৃত্যু «» শমশেরনগর হাসপাতাল পরিবারে যুক্ত হলেন বৃটেন প্রবাসী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মোফাসসিল আলম সোহেল «» বগুড়ায় ফেন্সিডিলসহ ২ জন গ্রেফতার «» মৌলভীবাজারে বিএনপি নেতা ভিপি মিজানুর রহমানসহ ১৪ নেতাকর্মী কারাগারে «» ন্যায্য মূল্যে পণ্য প্রাপ্তি নিশ্চতকরণে কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে «» মৌলভীবাজারে বিএনপি নেতা ভিপি মিজানুর রহমানসহ ১৪ নেতাকর্মী কারাগারে «» মৌলভীবাজারে ক্যাব-এর মানববন্ধন ও স্বারকলিপি প্রদান

টিআইবি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

 ঢাকা ওয়াসার বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালককেই পুনর্নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ অনৈতিক ও বিধিবহির্ভূত: এই দুর্নীতি সুরক্ষাকারীর পক্ষ পরিহারের আহ্বান টিআইবির
ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০: বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালককেই অনৈতিক ও বিধিবহির্ভূতভাবে পুনর্নিয়োগ দেওয়ার  প্রস্তাব নিয়ে আজ ঢাকা ওয়াসা বোর্ড যে বিশেষ বৈঠকে বসতে যাচ্ছে তাকে দুর্নীতির সুরক্ষামূলক আখ্যায়িত করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি বলছে, সভার আলোচ্যসূচির ভাষায় এটা স্পষ্ট যে বরাবরের মতো এবারও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ঢাকা ওয়াসার শীর্ষ ব্যবস্থাপনায় একই ব্যক্তির অনৈতকি ও অবৈধ বহাল অব্যাহত রেখে দীর্ঘকালের লালিত এককেন্দ্রিক আধিপত্যবাদ অপরিবর্তিত রাখার সব ব্যবস্থা করে ফেলা হয়েছে। ধারাবাহিক ব্যর্থতা এবং অনিয়মের গুরুতর সব অভিযোগ থাকার পরও এই পদে প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ ও অব্যাহত পুনর্নিয়োগ ওয়াসায় শুদ্ধাচার তথা সার্বিকভাবে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকারকে প্রহসনে পরিণত করেছে বলে মনে করে টিআইবি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “গণমাধ্যম ও নির্ভরযোগ্য প্রত্যক্ষ তথ্য সূত্র অনুযায়ী ঢাকা ওয়াসার বোর্ডের বিশেষ সভায় শুধুমাত্র বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নাম উল্লেখ করে তাঁকে আবারও তিন বছর মেয়াদে পুনর্নিয়োগের সুপারিশ চূড়ান্ত করার কথা বলা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী এই পদে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছিল কী না, কারা আবেদন করেছিলেন, কেন তাঁরা যোগ্য বিবেচিত হলেন না, বা কেন বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকই একমাত্র উপযুক্ত প্রার্থী, কেন সংশ্লিষ্ট বিধি অবমাননা করে মেয়াদের পর মেয়াদ একই ব্যক্তিকে নবায়ন দান অপরিহার্য, এসব প্রক্রিয়াগত প্রশ্নের উত্তর যাচাই করা হয়েছে কী না, তার কোনো উল্লেখ নেই। পক্ষান্তরে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রায় দশকব্যাপী দায়িত্বকালে জনদুর্ভোগের বিষয়টি কারো অজানা নয়। টিআইবির গবেষণা ও নির্ভরযোগ্য সংশ্লিষ্ট সকল সূত্রে ওয়াসার ছোট-বড় অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন ও সেবা পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভূতপূর্ব বিস্তারের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে এবং তার কোনো কোনো বিষয় তদন্তাধীন রয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, সরকার প্রধান যেখানে বারংবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীলতার’ কথা বলছেন, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়ন করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন, তখন এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু ঘটনা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে আমরা আর হতাশার কথা বলতে পারছি না। আমরা এখন ওয়াসায় শুদ্ধাচার বা সুশাসনের সম্ভাবনার কথা বলতেও লজ্জা পাচ্ছি, এবং এই প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি ও এর সুরক্ষাকারীর তোড়জোড়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এই পথ পরিহারের জন্য মন্ত্রণালয় ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
ড. জামান বলেন, “২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিতর্কিত নিয়োগের পর প্রশ্নবিদ্ধ প্রক্রিয়ায় টানা পাঁচ মেয়াদে ১১ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে ও অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, প্রতিবারই তার নিয়োগ নবায়নের ক্ষেত্রে কোনো না কোনোভাবে আইন ও নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে। এমনকি প্রথমবার নিয়োগের সময়ই অনিয়মের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নিয়োগে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য দালিলিক নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরও কখনও বয়সসীমা বাড়িয়ে, আবার কখনও বা বোর্ডের সাম্প্রতিক সভার সুপারিশ পাশ কাটিয়ে পুরনো সভার তামাদি সুপারিশ ব্যবহার করে, এমনকি বোর্ডের মতামত গ্রহণেরই তোয়াক্কা না করে প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে, এমনকি একটি ক্ষেত্রে একজন বিতর্কের ঊর্ধ্বে মন্ত্রীর লিখিত নির্দেশ অমান্য করে দৈব প্রক্রিয়ায় পুনর্নিয়োগ নিশ্চিত করা হয়। যা শুধু আইনেরই সুস্পষ্ট ব্যত্যয় নয়, বরং ক্ষমতার অপব্যবহার ও যোগসাজশের সংস্কৃতির নির্লজ্জ প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের দৃষ্টান্ত।”
আবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক দাবি জানান, “বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সর্বশেষ বর্ধিত মেয়াদ আগামী ১৪ অক্টোবর ২০২০ শেষ হবার পূর্বেই যথানিয়মে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট খাতে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে। একইসাথে, এই সংস্থার এবং এর সেবাগ্রহীতা জনগণের কল্যাণে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ ও অব্যাহত পুনর্নিয়োগ বিষয়ে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ নিরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে। পাশাপাশি ওয়াসার সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বৈধ আয়ের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদের সুষ্ঠু তদন্ত করে অনিয়ম ও দুর্নীতির জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি বলেন, “এটা নিশ্চিত যে ঢাকা ওয়াসা বোর্ড তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করছে না, বা করতে দেওয়া হচ্ছে না।  প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন, বিশেষ করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধে অপারগতার কারণে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডেরও অপসারণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানাই।”