আজ-  ,


সময় শিরোনাম:
«» সংবাদ বিজ্ঞপ্তিবিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৪জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিতের বিকল্প নেইঢাকা, ০২ মে ২০২৪: «» জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরমৌলভীবাজার জেলা কার্যালয় মৌলভীবাজার জেলা কার্যালয় «» চশমা প্রতীকে লড়বেন গোয়াইনঘাটের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম আম্বিয়া কয়েছ «» মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহীনা রহমান নির্বাচিত «» জুড়ীতে গাছ থেকে পড়ে কাঠুরিয়ার মৃত্যু «» জুড়ীতে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের সাথে যুব ফোরামের সভা অনুষ্ঠিত «» কুলাউড়ায় হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের «» জুড়ীতে হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রা. কওমী মাদ্রাসা উদ্বোধন «» রাজনগরে কদমহাটা শ্রী শ্রী কালীবাড়ির পুনঃনির্মিত মন্দিরের শুভ উদ্বোধন «» বার্তা সম্পাদক/প্রধান প্রতিবেদক/ব্যুরো প্রধান/নগর সম্পাদক

এনডিএফ নেতা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আফজাল
চৌধুরী স্মরণে শোকসভা অনুষ্টিত

প্রেসবিজ্ঞপ্তি তারিখ ঃ
২০/০৪/২০২৪
এনডিএফ নেতা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আফজাল
চৌধুরী স্মরণে শোকসভা অনুষ্টিত
জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির নেতা,
সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ, আমলা মুৎসুদ্দি পুঁজি বিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক
বিপ্লবের অন্যতম অগ্রসৈনিক, শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষের বন্ধু, যুক্তরাষ্ট্র
প্রবাসী প্রবীণ রাজনীতিবিদ এম এন নজমুল হক চৌধুরী (আফজাল চৌধুরী)
স্মরণে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা কমিটির উদ্যোগে শোকসভা
অনুষ্টিত হয়েছে। জেলা এনডিএফ’র সভাপতি ডা. আব্দুশ শহীদ সাগ্নিকের
সভাপতিত্বে ১৯ এপ্রিল বিকেল ৪ টায় কুলাউড়া পৌরসভা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত
শোকসভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট
জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির
সাবেক সভাপতি এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন, বাংলাদেশ ট্রে
ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার ও
মৌলভীবাজর জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ নুরুল মোহাইমীন মিল্টন, বাংলাদেশ কৃষক
সংগ্রাম সমিতির মৌলভীবাজার জেলা কমিটির আহবায়ক অবনী শর্ম্মা, ন্যাপ
ভাসানীর প্রবীন নেতা আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরী ও ধ্রবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ
মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা। শোকসভার শুরুতে
প্রয়াত আফজাল চৌধুরীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা
পালন করা হয়। জেলা এনডিএফের সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাসের পরিচালনায়
অনুষ্টিত শোকসভায় বক্তব্য রাখেন লংলা আধুনিক কলেজের অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম
রুবেল, বামফ্রন্ট নেতা ছানালাল দে, হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট জেলা
কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী , হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন কুলাউড়া
উপজেলা কমিটির সাবেক সভাপতি ছায়েদ মুন্সী ও জুড়ী উপজেলা কমিটির সভাপতি
আব্দুল করিম, চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবজার জেলা কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক
হরিনারায়ন হাজরা, রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন জেলা কমিটির সভাপতি সোহেল আহমদ,
জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ শান্ত, জুড়ী রাইস মিল
শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক শহীদ আহমেদ, জুড়ী স’মিল মিল শ্রমিক সংঘের
নেতা আব্দুল আলী।
শোকসভায় বক্তারা বলেন ব্রিটিশ আমল থেকে বৃহত্তর সিলেটের বামপন্থী প্রগতিশীল
রাজনীতিতে কুলাউড়া-শমসেরনগরের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তৎকালে
‘কুলাউড়ার ভাসানী’ খ্যাত সৈয়দ আকমল হোসেন, ‘কৃষকের রাজা’ খ্যাত রাজা আলী
সফদর খান, প্রখ্যাত চা-শ্রমিকনেতা মফিজ আলী প্রমুখ বরেণ্য নেতৃবৃন্দের
রাজনৈতিক তৎপরতার প্রেক্ষিতে কুলাউড়া ও শমসেরনগরে প্রগতিশীল রাজনীতির
অনুকুল পরিবেশ গড়ে উঠেছিল। বামপন্থী-প্রগতিশীল রাজনীতির প্রভাবে আফজাল
চৌধুরীও ছাত্রজীবনে প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ছাত্র রাজনীতির
ধারায় পরবর্তীতে তিনি এদেশ থেকে সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ উচ্ছেদের বিপ্লবী
রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে উপমহাদেশের খ্যাতনামা কমিউনিস্ট বিপ্লবীনেতা

কমরেড আবদুল হক, কমরেড অজয় ভট্টাচার্য, কমরেড দ্বিজেন সোম প্রমুখ বিপ্লবী
নেতৃবৃন্দের সান্নিধ্য লাভের সুযোগ পান। বিশেষত নানকার আন্দোলনের রূপকার
কমরেড অজয় ভট্টাচার্যের সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল বেশি। কমরেড অজয়
ভট্টাচার্যের সাথে একজন তরুণ কর্মী হিসেবে তিনি কুলাউড়া ও কমলগঞ্জ উপজেলার
প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষক ও চা শ্রমিকদের সংগঠিত করতে সক্রিয় ভ‚মিকা পালন করেন।
এসময় তিনি কমরেড আবদুল হক ও কমরেড অজয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে পূর্ব-
পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি (এম-এল) এর রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত হন।
সক্রিয় রাজনীতির পাশাপাশি ভালো ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবেও কুলাউড়ায় তাঁর
খ্যাতি ছিল। সে সময় রাজনৈতিক-সাংগঠনিক কারণে তিনি সাংসারিক ও
পারিবারিক জীবন সম্পর্কে অনেকটা নির্লিপ্ত ছিলেন। রাজনৈতিক কারণে আফজাল
চৌধুরী কারাবরণ ও নির্যাতনের শিকার হন। পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন
প্রবাসে থাকলেও আফজাল চৌধুরী সবসময় সংগঠনের সাথে নিবিড় যোগাযোগ
রাখতেন। সুদূর প্রবাসে থেকেও আমৃত্যু সংগঠনের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত
রাখা, প্রবাস থেকে দেশে আসলে সাংগঠনিক কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ,
সংগঠনের প্রয়োজনে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা এবং নেতাকর্মীদের
নিয়মিত খোঁজ খবর নেওয়া ইত্যাদির মধ্য দিয়ে বিরল উদাহরণ তৈরি করে গেছেন
তিনি। নেতৃবৃন্দ বলেন আফজাল চৌধুরী এমন এক সময় মৃত্যুবরণ করেন যখন
বিশ্বব্যাপী বাজার ও প্রভাব বলয় পুনর্বন্টন নিয়ে মুদ্রাযুদ্ধ, বাণিজ্যযুদ্ধ, স্থানিক ও
আঞ্চলিক যুদ্ধের ধারাবাহিকতায় আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ বিস্তৃত হয়ে পারমানবিক
অস্ত্রের ব্যবহারসহ তৃতীয় বিশ্বযদ্ধের বিপদ বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে
আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ দুই বছরের বেশি সময়ব্যাপী চলছে, এই যুদ্ধের একদিকে
মার্কিনের নেতৃত্বে পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদীদের জোট ন্যাটো, অন্যদিকে রয়েছে
সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়া ও চীন। সাম্রাজ্যবাদী উভয়পক্ষের প্রতিদ্ব›িদ্বতার প্রকাশ ঘটছে
মধ্যপ্রাচ্যেও। মার্কিনের নেতৃত্বে পাশ্চাত্যের সাম্রাজ্যবাদীদের এবং তাদের মদদপুষ্ট
ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনে আগ্রাসন, দখল, নারী-শিশুসহ নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ ও
বর্বর গণহত্যা চালাচ্ছে। নয়াউপনিবেশিক-আধাসামন্তবাদী বাংলাদেশের
ভ‚রাজনৈতিক ও রণনীতি গুরুত্বের প্রেক্ষিতে মার্কিনের নেতৃত্বে পাশ্চাত্যের
সাম্রাজ্যবাদীদের সাথে সাম্রাজ্যবাদী চীন ও রাশিয়ার আধিপত্য, প্রতিযোগিতা-
প্রতিদ্ব›িদ্বতা তীব্রতর হয়ে চলেছে। বাংলাদেশে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রাধান্য
থাকলেও সাম্রাজ্যবাদী চীন-রাশিয়ার প্রভাব বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। সাম্রাজ্যবাদী উভয়পক্ষ
স্বীয়স্বার্থে বাংলাদেশকে আগ্রাসী যুদ্ধে সম্পৃক্ত করতে চায়। তাই জনগণকে
আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করার বিরুদ্ধে সকল সাম্রাজ্যবাদ ও তার
এদেশীয় দালালদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থরক্ষাকারী
আওয়ামী লীগ সরকারের মদদে মুৎসুদ্দি পুঁজিপতিদের অস্বাভাবিকভাবে চাল-ডাল, তেল-
লবন-চিনি, আলু-পিয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল দ্রব্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতির
কারণে শ্রমিক-কৃষক, মেহনতি জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে জীবন-
জীবিকা আরো সংকটগ্রস্ত ও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জনগণের জীবন-জীবিকার সকল
প্রয়োজনীয় বিষয় রাষ্ট্রীয় ও দলীয় ব্যবসায়ীদের অবাধ লুটপাট ও লাগামহীন
বাণিজ্যক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। দেশের শ্রমিক-কৃষক, মেহনতি জনগণ এই দুঃসহ
পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায়। সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, আমলা মৎসুদ্দি পুঁজি তথা
শোষণের তিন পাহাড়কে উচ্ছেদ ছাড়া জনগণের মুক্তির ভিন্ন কোন পথ নেই।
মার্কসবাদ-লেনিনবাদের প্রতি আস্থাশীল আফজাল চৌধুরী বিশ্বাস করতেন আজ
হোক বা কাল হোক শ্রমিকশ্রেণির নেতৃত্বে শ্রমিক-কৃষকের মৈত্রীর ভিত্তিতে
একদিন এদেশ থেকে সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদকে উচ্ছেদ করে জাতীয় গণতান্ত্রিক
বিপ্লব সম্পন্ন হবেই। তাই আফজাল চৌধূরীর আজন্ম লালিত স্বপ্ন সাম্রাজ্যবাদ-
সামস্তবাদ মুক্ত শ্রমিক-কৃষক, মেহনতি জনগণের রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠার
সংগ্রামকে বেগবান করে তাঁর স্মৃতির প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হবে।
উল্লেখ্য গত ২৩ মার্চ কিডনির রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রায়
৭৭ বছর বয়সে আফজাল চৌধুরী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইর্য়কে মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৪৭ সালে ১৪ আগস্ট তিনি কুলাউড়া উপজেলার বাদেমনসুর গ্রামে জন্মগ্রহণ
করেন।