আজ-  ,


সময় শিরোনাম:
«» মৌলভীবাজারে বিসমিল্লাহ ইউকে চ্যারিটি সংগঠনের ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠিত «» আজ জুড়ি উপজেলা নির্বাচন- নির্বাচন ঘিরে উৎফুল্ল বিএনপি নেতাকর্মীরা  «» বগুড়ায় মজুরি বৈষম্যের শিকার  নারী শ্রমিকরা «» কমলগঞ্জে ঐতিহাসিক উসমানগড় মাঠে সরকারি ভূমি দখলের হিড়িক «» বিসমিল্লাহ ইউ,কে চ্যারিটি সংগঠনের উদ্যোগে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠিত «» মৌলভীবাজারে বড়কাপন সৈয়দবাড়ী জামে মসজিদ সম্প্রসারণ ও পুননির্মাণে মুক্ত হস্তে দান করার আহবান «» সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব পদে পদায়ন হয়েছেন চৌধুরী মামুন আকবর «» মৌলভীবাজারে ১২৫ জন হজযাত্রীর অংশগ্রহণে মবশ্বির-রাবেয়া ট্রাষ্ট্রের ফ্রি হজ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত «» উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে- সিসিক মেয়র «» ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযান ও জরিমানা

জে-ার ও গ্রাম আদালত বিষয়ক সক্ষমতা বৃদ্ধি কর্মশালায় গ্রাম আদালতের সার্বিক বিচার- প্রক্রিয়া নারী-বান্ধব ও ভয়মুক্ত করতে হবে

মোঃ মাজেদুর রহমান খান, জেলা প্রশাসক, চাঁদপুর
চাঁদপুর, অক্টোবর ২৪, ২০১৮: ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক
অধিকার। কিন্তু দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত নারী-পুরুষ বিভিন্ন কারণে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে
বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। এই বাস্তবতায় বিচারিক সেবাকে সবার জন্য সহজগম্য করতে
বাংলাদেশ সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অ-আনুষ্ঠানিক ও আধা-আনুষ্ঠানিক বিচারিক
প্রতিষ্ঠান বিশেষ ক’রে গ্রাম আদালত শক্তিশালী করার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। গ্রাম
আদালত কিভাবে নারী-বান্ধব করা যায় তা নিয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জে-ার ও
গ্রাম আদালত বিষয়ক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সচেতনতামূলক দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগ, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি)
-এর আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পরিচালিত বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য়
পর্যায়) প্রকল্পের সহযোগিতায় কর্মশালাটি জেলা প্রশাসন আয়োজন করে।
স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ শওকত ওসমান -এর সভাপতিত্বে কর্মশালায়
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান,
যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং ভারপ্রাপ্ত জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার মোঃ মোস্তফা শাহরিয়ার
খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান এবং চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল
হোসেন পাটওয়ারী।
প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান বলেন, গ্রাম আদালতের সার্বিক
বিচার-প্রক্রিয়া নারী-বান্ধব ও ভয়মুক্ত করতে হবে। আইনের দৃষ্টিতে প্রত্যেক নাগরিক সমান এবং
আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। সমতার এই বিধান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন
সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত। সাংবিধানিক অঙ্গীকার অনুসরণ করে নারীদের উন্নয়নের জন্য
বিভিন্ন আইন ও নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। নারীর সম-সুযোগ ও সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য
২০১১ সালে প্রণীত হয়েছে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি। আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায়ও
সমতার ভিত্তিতে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত করার নির্দেশনা সংযুক্ত হয়েছে। এছাড়াও ২০১৮
সালে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক মহোদয়দের সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে একগুচ্ছ
নির্দেশনা প্রদান করেছেন সেখানেও সাধারণ জনগণের কাছে ন্যায়বিচারকে সহজ করতে
এবং মামলার জট কমাতে গ্রাম আদালতকে কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যমান
সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন কারণে নারীরা এখনও অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে রয়েছে। ন্যায়বিচার
প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও নারীদের জন্য বিভিন্ন বাধা রয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায়
নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেলেও এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।
বিশেষ অতিথি যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ
মোস্তফা শাহরিয়ার খান বলেন, প্রথাগতভাবে স্থানীয় জনগণ বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য
জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্ত হয়। এই অভিজ্ঞতার সূত্র ধরেই স্থানীয় পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে
এলাকার ছোটো-খাটো বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে ১৯৭৬ সালে গ্রাম আদালত অধ্যাদেশ জারি
করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে (২০১৩ সালে সংশোধিত) ইউনিয়নের এখতিয়ারাধীন এলাকার
মধ্যে সংঘটিত ছোটো-খাটো বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আইন
প্রণীত হয়। তাই, সাধারণ জনগণের বিচার ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে গ্রাম
আদালত সক্রিয়করণে আমাদের নিজ নিজ পক্ষ থেকে ভূমিকা পালন করতে হবে।বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, গ্রাম আদালতের মাধ্যমে
বিচারিক প্রতিকার লাভের ক্ষেত্রে নারী ও অন্যান্য সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি ও
গ্রাম আদালতের প্যানেল সদস্য হিসেবে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে
হবে। এই লক্ষ্যে গ্রাম আদালতের সেবা নারী-পুরুষ সবার কাছে সমানভাবে পৌঁছে দিতে সবার
জন্য স্বাচ্ছন্দ্যময় একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে বিরোধ
নিরসনের ইতিহাস অনেক পুরনো।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউএনডিপি’র জে-ার স্পেশালিষ্ট কামরুন্নেসা নাজলী
এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রকল্পের ডিস্টিক্ট্র ফ্যাসিলিটেটর
নিকোলাস বিশ্বাস। কর্মশালায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা ও দায়রা জজ কোর্টের
বিজ্ঞ বিচারক, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার, জেলা পুলিশের কর্মকর্তা, সরকারের
বিভিন্ন লাইন ডিপার্টমেন্টের জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান ও নারী সদস্য,
এ্যাডভোকেট, স্কুল শিক্ষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের
কর্মকর্তা সহ ৬০ জন এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।