আজ-  ,


সময় শিরোনাম:
«» বগুড়া সান্তাহারে টিকিট কাউন্টার থেকে মাদকসেবীর  লাশ উদ্ধার «» বাইরে সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ঢোকানোর সময় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও এজেন্ট আটক «» শমশেরনগর হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করলেন ইংল্যান্ড প্রবাসী শিবলী আহমেদ চৌধুরী «» মৌলভীবাজারে বিসমিল্লাহ ইউকে চ্যারিটি সংগঠনের ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠিত «» আজ জুড়ি উপজেলা নির্বাচন- নির্বাচন ঘিরে উৎফুল্ল বিএনপি নেতাকর্মীরা  «» বগুড়ায় মজুরি বৈষম্যের শিকার  নারী শ্রমিকরা «» কমলগঞ্জে ঐতিহাসিক উসমানগড় মাঠে সরকারি ভূমি দখলের হিড়িক «» বিসমিল্লাহ ইউ,কে চ্যারিটি সংগঠনের উদ্যোগে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠিত «» মৌলভীবাজারে বড়কাপন সৈয়দবাড়ী জামে মসজিদ সম্প্রসারণ ও পুননির্মাণে মুক্ত হস্তে দান করার আহবান «» সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব পদে পদায়ন হয়েছেন চৌধুরী মামুন আকবর

নারীনেত্রী সুলতানা রাজিয়ার শোকসভায় বক্তারা ধর্ষণ প্রতিরোধে নারী-পুরুষের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে

গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক নারীনেত্রী সুলতানা রাজিরার মৃত্যুতে আয়োজিত শোকসভায় বক্তারা দেশে অব্যাহত নারী ধর্ষণ, নারী নির্যাতনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ধর্ষণ প্রতিরোধে নারী মুক্তির লক্ষ্যে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় নারী-পুরুষের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তোলার আহবান জানান। গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি মৌলভীবাজার জেলা কমিটি আয়োজিত শোকসভায় বক্তারা আরো বলেন নারীরা আজ কলেজে, মাদ্রাসায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে, কর্মক্ষেত্রে, গণপরিবহণে, নিজ বাড়িতে ধর্ষিত হচ্ছে। অথচ নারী অধিকার, নারীর ক্ষমতায়, নারী উন্নয়ন নিয়ে নানা রকম গালভরা বুলি শুনিয়ে সরকার তথাকথিত উন্নয়নের সাফাই গাইছে। নারীর সার্বিক নিরাপত্তা তথা নারী মুক্তির লক্ষ্যে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা-মুৎসুদ্দি পুঁজি বিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক সরকার, রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সাথে নারী-পুরুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। ১২ অক্টোবর সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার শহরতলীর কালেঙ্গা বাজারে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি দেলোয়ারা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শোকসভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস, ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা, মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৩০৫ এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া, গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আম্বিয়া বেগম, দপ্তর সম্পাদক মনোয়ারা বেগম, সদস্য ফাতেমা বেগম, মৌলভীবাজার জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৪৫৩ এর কোষাধ্যক্ষ মোঃ গিয়াসউদ্দিন, কালেঙ্গা আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান খোকন, শ্রমিকনেতা মাহমুদুর রহমান ও আব্দুল জব্বার প্রমূখ। সভায় বক্তারা বলেন বিচারহীনতার কারণে বাংলাদেশে ধর্ষণ কার্যত অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। দেশের আনাচে-কানাচে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বয়সী নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। কখনো কখনো অবিশ্বাস্য রকমের পাশবিক কায়দায় চলেছে ধর্ষণ; যেন ধর্ষকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে ধর্ষণপ্রবণতা সংক্রামক ব্যাধির মতো বেড়ে গেছে। সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের কতিপয় কর্মীর সংঘবদ্ধ ধর্ষণযজ্ঞের পর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন চালানো এবং সেই ন্যক্কারজনক পৈশাচিকতার ভিডিও চিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। গত ৯ মাসে দেশে ৯৭৫ টি ধর্ষণের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, আর অপ্রকাশিত ধর্ষণের ঘটনার তো কোন হিসাবই নেই। অথচ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, প্রতিবাদের প্রয়োজন নেই; সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান পৃথিবীর সকল দেশেই ধর্ষণ হয় বলে মন্তব্য করে প্রকারান্তরে ধর্ষকদেয় পশ্রয় দিচ্ছেন। সরকারি সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ থেকে ২০২০ সালের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার মাত্র ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশের ক্ষেত্রে আদালতের রায় ঘোষিত হয়েছে; আর অপরাধীদের দন্ডদেশ ঘোষিত হয়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ মামলায়। নারীর প্রতি সহিংসতা তথা নারী ও শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন, হত্যা বন্ধ করতে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ছাড়া সম্ভব নয় যা মূলত সমাজ পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত।
সভায় বক্তারা বলেন প্রয়াত নারীনেত্রী জিনাত রেহানা আমৃত্যু নারী মুক্তির লক্ষ্যে শোষিত- বঞ্চিত নির্যাতিত নারী-পুরুষ আপামর জনগণের দুঃখ-দুর্দশা, অভাব-অনটন-সমস্যা-সংকটের জন্য দায়ী প্রচলিত আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। বাংলাদেশের নারী সমাজ তথা শ্রমিক-কৃষক-জনতার দুঃখ-কষ্ট, সমস্যা-সংকটের মূল কারণ হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা-মুৎসুদ্দি পুঁজির শোষণ ও শাসন। অথচ এই সত্যকে আড়াল ও অস্বীকার করে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল শাসক-শোষক গোষ্ঠি এবং এনজিও’রা নারী ও পুরুষের মধ্যকার বিভক্তি বৃদ্ধি করে জনগণের ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। বাংলাদেশের নারী সমাজের দায়িত্ব হচ্ছে প্রয়াত সুলতানা রাজিয়ার দেখিয়ে দেওয়া পথে নারী মুক্তির লক্ষ্যে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা-মুৎসুদ্দি পুঁজি বিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক সরকার, রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সাথে নারী-পুরুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলা।