প্রেসবিজ্ঞপ্তি তারিখঃ ০৫/০৫/২০২৪
মে দিবসের দিনে সিলেটে হোটেল শ্রমিকনেতাদের নামে মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ মৌলভীবাজার হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের
মহান মে দিবসের কর্মসূচি পালনের ঘটনাকে কেন্দ্র সিলেটে জনৈক হোটল মালিক কর্তৃক সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের এবং ২ জন শ্রমিকনেতাকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তারেশ চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া ০৫ মে রবিবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রতিবাদ বিবৃতিতে উল্লেখ করেন ১৮৮৬ সালে শ্রমিকশ্রেণি বুকের তাজা রক্ত দিয়ে ও ফাঁসি কাষ্ঠে আত্মাহতি দিয়ে ৮ ঘন্টা শ্রম, ৮ ঘন্টা বিনোদন ও ৮ ঘন্টা বিশ্রামের ঐতিহাসিক দাবি আদায় করে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে ১ মে সর্বজনীন ছুটি হিসেবে স্বীকৃত হয়। শ্রমিকদের অর্জিত দাবির সুফল হিসেবে আজ সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী ৮ ঘন্টা অফিস ও ১ মে ছুটি ভোগ করেন। এমন কি শ্রমিকদের আইনগত অধিকার ও সমস্যা নিরসণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম দপ্তরের কর্মকর্তারাও ৮ ঘন্টা অফিস ও ১ মে ছুটি ভোগ করলেও শ্রমিকদের জন্য ৮ ঘন্টা কর্মদিবসের আইন বাস্তবায়ন ও ১ মে ছুটির প্রেক্ষিতে কার্যত তারাও নির্লিপ্ত থাকেন। শ্রমিকদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল হিসেবে আজ অনেক জেলায় হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিকরা ১ মে ছুটি ভোগ করে মে দিবসের কর্মসূচি পালন করেন। এবছরও সিলেটে হোটেল শ্রমিকরা ছুটি ভোগ মে দিবসের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রাম অগ্রসর করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। শ্রমিকরা ছুটিতে থাকায় মে দিবসে সিলেট নগরীর সকল হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ ছিল। কিন্ত গুটি কয়েক মালিক পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে উস্কানিমূলক ও ষড়যন্ত-চক্রান্তের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে শ্রমিকদের দিয়ে জোরপূর্বক কাজ করিয়ে শ্রমিকদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত ও ক্ষতিগ্রস্থ করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবসের দিনে শ্রমিকনেতাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মালিকের মিথ্যা মামলায় পুলিশ সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের ক্রিড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাগর মিয়া ও হোটেল শ্রমিকনেতা শাহিন আহমেদকে কর্মস্থল থেকে গ্রেফতার করে। সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা অভিযোগ করেছেন মালিকদের মিথ্যা মামলায় পুলিশী হয়রানিতে অনেক সাধারণ হোটেল শ্রমিকরাও ভয়ে কর্মস্থলে যেতে পারছেন না। পুলিশ কর্মস্থল থেকে এখন পর্যন্ত ৩ জন হোটেল শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে, যার মধ্যে দজুনের নাম মালিকদের কথিত মামলায়ও ছিল না। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে শ্রমিক নেতাদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রতাহার, গ্রেফতারকৃত শ্রমিকনেতার মুক্তি প্রদান এবং পুলিশী হয়রানি বন্ধের জোর দাবি জানান। একই সাথে নেতৃবৃন্দ সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের মহান মে দিবসের সংগ্রামের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন মে দিবসের সংগ্রামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মালিকশ্রেণি তৎকালীন শ্রমিকশ্রেণির বিরুদ্ধে পুলিশ ও মাস্তান লেলিয়ে দিয়ে হত্যা, নির্যাতন ও প্রহসনের বিচার করে শ্রমিকনেতাদের ফাঁসি কাষ্ঠে ঝুলিয়ে যেমন আন্দোলন-সংগ্রাম দমন করতে পারেনি তেমনি আজকের মালিকশ্রেণিও শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ ন্যায্যসঙ্গত আন্দোলন সংগ্রামকে দমন করতে পারবে না। মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন অতীতের ন্যায় সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের পাশে থেকে চলমান আন্দোলন-সংগ্রামকে অগ্রসর করে নিয়ে যেতে সর্বাত্নক সহযোগিতার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।