দীপ্ত ডেস্ক ঃ
মৌলভীবাজার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজনগর উপজেলার পাঁচগাওসহ বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, গনহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুন্ঠন ও অগ্রিœসংযোগেরমত সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত মৌলভীবাজার টাউনকামিল মাদরাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল ও কোর্ট জামে মসজিদ ( জেলা জামে মসজিদ) এর ইমাম মাওলানা আকমল আলী তালুকদার (৭৩), আব্দুর নুর তালুকদার ওরফে লাল মিয়া (৬২), আনিছ মিয়া (৭৬) ও আব্দুল মোছাব্বিরকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ ১৭ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। তাদের বিরুদ্ধে আনীত দুটি অভিযোগই আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। প্রথম অভিযোগ ৬১ জনকে হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদন্ড ও দ্বিতীয় অভিযোগে তাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। গত ২৭ মার্চ যুক্তিতর্ক শেষে অপেক্ষমান (সিএভি) রেখে আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর হায়দার আলী ও শেখ মুশফেক কবীর। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার। এছাড়া পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্টনিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন আবুল হোসেন। গত বছরের ৭মে এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা- গণহত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, মরদেহ গুম, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দু’টি অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে আনুমানিক ১শত২টি পরিবারের ১শত৩২টি ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ, ৬ জনকে ধর্ষণ, ৭জনকে অপহরণ ও ৬১ জনকে হত্যার অভিযোগ। একাত্তরের ৭ মে থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ও পশ্চিমভাগ গ্রামে তারা এসব মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছেন বলে অভিযোগে বলা হয়। ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর ওই চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। ওই দিনই দুপুরে রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামের বাড়ী থেকে আকমল আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে লাল মিয়া, আনিছ ও মোছাব্বির পালিয়ে যান। এই রায়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে মৌলভীবাজারবাসী । এলাকাবাসী জানিয়েছেন, এই রায়ের মাধ্যমে কলঙ্কমুক্ত হলো মৌলভীবাজার। যতদ্রুত সম্ভব পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করে রায় কার্যকর করার দাবী জানান।