আজ-  ,


সময় শিরোনাম:
«» বগুড়ায় ফেন্সিডিলসহ ২ জন গ্রেফতার «» মৌলভীবাজারে বিএনপি নেতা ভিপি মিজানুর রহমানসহ ১৪ নেতাকর্মী কারাগারে «» ন্যায্য মূল্যে পণ্য প্রাপ্তি নিশ্চতকরণে কাজ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে «» মৌলভীবাজারে বিএনপি নেতা ভিপি মিজানুর রহমানসহ ১৪ নেতাকর্মী কারাগারে «» মৌলভীবাজারে ক্যাব-এর মানববন্ধন ও স্বারকলিপি প্রদান «» বগুড়া আদমদীঘিতে উপজেলা নির্বাচনে ১০ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা «» জুড়িতে হুইসেল বেøায়ার অন্তভুক্তিকরন সভা। «» নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় ইসতিসকার নামাজ আদায় «» নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় ইসতিসকার নামাজ আদায় «» মৌলভীবাজারে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিদের সাথে অপরাজিতা নেটওয়ার্ক এর অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

ছাত্রলীগ নেতা নাঈম ও শ্রীমঙ্গল তরুণ যুবকদের কারনে ২বছর পর বাবা ছেলের মিলন

কে এস এম আরিফুল ইসলাম,  ডিভিশনাল চিফ রিপোর্টার::

শ্রীমঙ্গলের বিশিষ্ট ব্যববসায়ী পার্থ সারথী দাশ প্রতিদিনই লাউছড়ায় বেড়াতে যান।প্রতি দিনের মতোই গত ২১ শে সেপ্টেম্বর তিনি বেড়াতে গিয়ে লাউয়া ছড়ার গেইটের সামনে রাস্তার পাশে অপরিচিত একটি লোককে পড়ে থাকতে দেখতে পান।মাথায় ঝাকড়া চুল ও শরীরে বিভিন্ন ক্ষত নিয়ে শুয়ে আছে।তা দেখে তিনি ছিলেটির কয়েকটি ছবি তোলে ফেসবুকে পোষ্ট দিয়ে সাহায্যের জন্য উপজেলার তরুণ সেচ্ছাসেবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।ফেসবুক তা দেখে মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে সেচ্ছাসেবক টিমের কিছু তরুণ এগিয়ে আসেন।তাদের মধ্যে রয়েছেন শ্রীমঙ্গল পৌর যুবলীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক সারোয়ার জাহান জুয়েল,উপজেলা ছাত্রলীগের আজিজুর রহমান নাঈম,শেখ সরোয়ার জাহান জুয়েল,মাহাদি হাসান,জুবেল আহমদ,তামজিদ পারভেজ,নাজমুল ইসলাম,সাদিক আহমদ রিফাত নাইম।তেমনি চোখে পড়ে ছাত্রলীগ কর্মী সেচ্ছাসেবক আজিজুর রহমান নাঈমেরও।তিনি সারোয়ার জাহান ও অন্যান্যদের সাথে যোগাযোগ করেন।পিকআপ ভ্যাগসহ সবাই মিলে লাউছড়ায় চলে যান।সেখানে দেখতে পান ছলেটিকে।সেখান থেকে তাকে তোলে এনে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে তার শরীরের ক্ষতস্থানের চিকিৎসা করান। তাকে খাবার খাওয়ান,নতুন শার্ট,প্যান্ট এনে তা পড়িয়ে দেন।হাসপাতাল থেকে সে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে ষ্টেশনে চলে আসে।তার পিছু পিছু সেচ্ছাসেবকও ষ্টেশনে আসেন।সেখানে তারা তাকে সিঙ্গারা কেক,পানীয় দিয়ে সাথের কয়েকজনকে বসিয়ে রেখে বাকি সদস্যরা চলে আসেন। ফসবুকে পোষ্ট দেন।ডিজিটাল প্রযুক্তি ফেসবুকের কল্যাণে সাড়া মিলে যায়।সেচ্ছাসেবক টিমপর সাথে যোগাযোগ করা হয়।তাদের কাছে লোকটির ছবি পাঠানো হয়।ছবি দেখে ছেলেকে চিনতে পারেন তা বাবা।ছেলেকে দেখতে গতকাল রাতে রওনা দিয়ে শ্রীমঙ্গলে আসেন। সেখানে ছেলেকে জড়িয়ে ধরেন ছেলেও তার বাবাকে চিনতে পেরেছে।তারপরই জানা গেলো ছেলেটির আসল পরিচয়।হারিয়ে যাওয়া ছেলেটির নাম মোঃ শরীফ মিয়া।তার পিতার নাম মোঃ খোরশেদ মিয়া।বাড়ী ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার কামারগাঁওবাজার সংলগ্ন নদীর কিনারে।তার বাবার সাথে শরীফের বোন জামাইও আসেন। তার বাবা খোরশেদ মিয়া বলেন,আমার ছেলে শরীফ কিছুটা মানসিক শরীফ মিয়া চিটাগাং পাইলিংয়ের কাজ করতো। নেত্রকোনা থানা শফিক মিয়া কন্ট্রাকটারের অধীনে পাইলিংয়ের কাজ করতে চিটাগাং চলে যায়।তার অধীনে শরীফ এক বছর কাজ করে কোন পারিশ্রমিক বা বেতন না পেয়ে সে সেখান থেকে চলে আসে।দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলো শরীফ।বাসায় গিয়ে কি জবাব দিবে সে ভয়ে বাসায় ফিরে যায়নি।কথাগুলো বলে কেঁদে ফেলেন তার বাবা।তিনি আরও বলেন আমি অনেক জায়গায় তাকে খোঁজ করেছি কিন্তু পাইনি।আপনারা আমার ছেলেকে পেয়ে যত্ন করে জামা কাপড় দিয়েছেন।আপনাদে জন্যে আজ আমি আমার ছেলেকে ফিরে পেয়েছি।আমি গরীব মানুষ আপনাদের ঋৃণ কখনও শোধ করতে পারবোনা।আমি আপনাদের কথা আজীবন মনে রাখবো আল্লাহ আপনাদের সবাইকে সুখে রাখবেন এই দোয়া ছাড়া আর কিছু আমার দেবার নেই।খবর পেয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ শ্রীমঙ্গল উপজেলার যুগ্ম- সম্পাদক এনাম চৌধুরী মামুন শরীফ ও তার বাবাকে দেখতে ও তাদের বিদায় জানাতে ষ্টেশনে আসেন।শরীফের বাবার কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেন।তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গল শান্তির শহর,পর্যটন শহর। এখানে ছাত্রলীগ কর্মীরা সবসময় গরীব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আসছে।আজ তারা যে মহৎ কাজ করেছে আমি তাদের ধন্যবাদ জানাতে এখানে এসেছি।শরীফকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে পেরেছে তা দেখে ভালো লেগেছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী পার্থ সারথী দাশ, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাংবাদিক মামুন আহমেদ ,ঝলক দত্ত, রূপক দত্ত।রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে শরীফ তার বাবা বোন জামাইকে নিয়ে শ্রীমঙ্গ উপজেলা পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখানে উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সাথে দেখা করে তার বাবার হাতে শরীফকে তোলে দেওয়া হয়।এসময় তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গলে এসে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেটি তার বাবাকে ফিরে পেয়েছে,বাবা পেয়েছে তার ছেলেকে।আর কাজটি করে দেখিয়েছে এখানেরই তরণ ছেলেরা।এখানে ছাত্রলীগকর্মী ও সেচ্ছাসেবক টিম যে মানবতা দেখিয়েছে তা অবশ্যই প্রশংসার দাবী রাখে।আমি তাদের সবাই আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।এরপর তাদের প্রয়োজনীয় খাবার,ফলমূল,পানীয়সহ নগদ অর্থ তার বাবার হাতে তোলে দেওয়া হয়। শরীফ,বাবা ও বোন জামাইকে গাড়ীতে তোলে বিদায় দেন সেচ্ছাসেবক ছাত্রলীগকর্মী নাঈম ও তার সাথের সহযোগীরা।