আজ-  ,


সময় শিরোনাম:
«» কমলগঞ্জে সরকারি যাকাত ফাণ্ডে যাকাত সংগ্রহ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা «» কমলগঞ্জে চা শ্রমিকের লাশ সৎকার থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তে «» বগুড়া সান্তাহারে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ একজন গ্রেপ্তার «» বগুড়া আদমদীঘিতে ট্রাকের ধাক্কায় একজন নিহত «» মৌলভীবাজার দুর্লভপুর এলাকায় পাইপ ও গ্যাসের রাইজার লাইন ঝুকিপূর্ণ : অগ্নি দুর্ঘটনা‘র আশংকা «» Destructive;Anarchy and Insecurity Will Increase On the Roads: TIBDhaka «» ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ মৌলভীবাজার পৌর শাখার বদর দিবসের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত «» ভোক্তা-অধিকার অধিদপ্তর কর্তৃক তদারকি অভিযান ও জরিমানা «» নওগাঁয় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উদযাপন «» মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠে একই পরিবারের ৫জন নিহত ও গুরুতর আহত-১

সদকাতুল ফিতরের তাৎপর্য ও মাসায়িল

 

সদকাতুল ফিতরের তাৎপর্য ও মাসায়িল-
এহসান বিন মুজাহির

 

পবিত্র রমজানের ইবাদতের মধ্যে সদকাতুল ফিতর আদায় করা একটি অন্যতম ইবাদত। রোজা অবস্থায় অবচেতনভাবে যে ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে যায়; যেসব ত্রুটির কারণে রোজা ভঙ্গ না হলেও দুর্বল হয়ে পড়ে হাদিসে সদকাতুল ফিতরকে তার কাফফারা বা ক্ষতিপূরণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন দেয়া সদকাকেই সদকাতুল ফিতর বলা হয়। সদকাতুল ফিতর উত্তম হলো ঈদের নামাজের আগে আদায় করে দেওয়া। কেননা রাসুল (সা.) ঈদগাহে যাওয়ার আগেই সদকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত এমন অভাবী লোকদের সদকাতুল ফিতর দিতে হবে। একজন দরিদ্র মানুষকে একাধিক ফিতর দেওয়া যেমন জায়েজ, তেমনি একটি ফিতরা বণ্টন করে একাধিক মানুষকে দেওয়াও জায়েজ। সদকাতুল ফিতরের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈদের খুশিতে গরিব শ্রেণির লোককেও শামিল করে নেওয়া। এর মাধ্যমে রোজার মধ্যে ত্রæটি-বিচ্যুতির ক্ষতিপূরণও হবে। দরিদ্র ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করা হয়। এর ফলে ঈদের দিনগুলোতে দরিদ্র ব্যক্তিরা ধনীদের মতো সচ্ছলতা বোধ করে। সদকাতুল ফিতরের ফলে ধনী-গরিব সবার জন্য ঈদ আনন্দদায়ক হয়। সদকাতুল ফিতর আদায়কারী দানশীল হিসেবে পরিগণিত হয়।
ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) সদকাতুল ফিতর আবশ্যক করেছেন। এর পরিমাণ হলো, এক সা যব বা এক সা খেজুর। ছোট-বড়, স্বাধীন-পরাধীন সামর্থ্যবান সবার ওপরই এটা আবশ্যক। (বুখারি, হাদিস নং : ১৫১২)।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা. রোজা পালনকারীর জন্য সদকাতুল ফিতর আদায় অপরিহার্য করে দিয়েছেন, যা রোজা পালনকারীর অনর্থক, অশ্লীল কথা ও কাজ পরিশুদ্ধকারী এবং অভাবী মানুষের জন্য আহারের ব্যবস্থা। যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের আগে এটা আদায় করবে, তা সদকাতুল ফিতর হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। আর যে ঈদের সালাতের পর আদায় করবে তা অপরাপর (নফল) সদকা হিসেবে গৃহীত। (আবু দাউদ, হাদিস নং: ১৩৭১)
সদকায়ে ফিতর যাদের উপর ওয়াজিব : ঈদের দিন সুবহে সাদেকের সময় যার কাছে যাকাত ওয়াজিব হওয়া পরিমাণ অর্থাৎ, অত্যাবশ্যকীয় আসবাব সামগ্রী ব্যবহার্য দ্রব্যাদি, বাসগৃহ ইত্যাদি বাদ দিয়ে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা বা সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সমমূল্য পরিমান সম্পদ থাকে তার উপর সাদকায়ে ফিতর দেয়া ওয়াজিব। শুধু ঈদের দিনে মালিক থাকলে ফিতরা ওয়াজিব হবে, জাকাতের মতো এক বছর অতিক্রান্ত হওয়া জরুরি নয়।
সদকাতুল ফিতর এর পরিমাণ : ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) সদকাতুল ফিতর আবশ্যক করেছেন। এর পরিমাণ হলো, এক সা যব বা এক সা খেজুর। ছোট-বড়, স্বাধীন-পরাধীন সবার ওপরই এটা আবশ্যক। (বুখারি, হাদিস নং : ১৫১২)।
ইবনে আব্বাস (রা.) একবার রমজানের শেষ দিকে বসরায় খুতবা প্রদান করেন। সেখানে তিনি বলেন, তোমাদের রোজার সদকা আদায় করো। লোকেরা যেন ব্যাপারটা বুঝতে পারে নি। তখন ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, এখানে মদিনার কে আছে দাঁড়াও। তোমাদের ভাইদেরকে বলো, তারা তো জানে না। বলো যে, রাসূল (সা.) এই সদকা আবশ্যক করেছেন। এক সা খেজুর বা যব অথবা আধা সা গম প্রত্যেক স্বাধীন-দাস, পুরুষ-নারী, ছোট-বড় সবার ওপর ওয়াজিব। (আবু দাউদ, হাদিস নং : ১৬২২)।
যারা জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত এমন অভাবী লোকদের সদকাতুল ফিতর প্রদান করতে হবে। একজন দরিদ্র মানুষকে একাধিক ফিতরা দেওয়া যেমন জায়েজ, তেমনি একটি ফিতরা বণ্টন করে একাধিক মানুষকে দেওয়াও জায়েজ। এই সদকা দেয়ার উদ্দেশ্য হলো ঈদের দিন গরীবের প্রয়োজন পূরণ করা, যেন তাকে দ্বিতীয়বার কারও কাছে চাইতে না হয়। কাজেই সামর্থ্যনুযায়ী বেশি মূল্যটা পরিশোধ করাই উত্তম। আল্লাহপাক আমাদেরকে যথাযথ সদকায়ে ফিতর আদায়ের তাওফিক দান করুন।

 

লেখক: সাংবাদিক, শিক্ষক ও কলাম লেখক ।