আজ-  ,


সময় শিরোনাম:
«» শমশেরনগর হাসপাতাল কমিটির সহ-সভাপতি মনোনীত হলেন ধলাইর ডাক পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ আনহার আলী «» কার্ডিফে ইউকে ওয়েলস আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত «» কমলগঞ্জে সরকারি যাকাত ফাণ্ডে যাকাত সংগ্রহ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা «» কমলগঞ্জে চা শ্রমিকের লাশ সৎকার থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তে «» বগুড়া সান্তাহারে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ একজন গ্রেপ্তার «» বগুড়া আদমদীঘিতে ট্রাকের ধাক্কায় একজন নিহত «» মৌলভীবাজার দুর্লভপুর এলাকায় পাইপ ও গ্যাসের রাইজার লাইন ঝুকিপূর্ণ : অগ্নি দুর্ঘটনা‘র আশংকা «» Destructive;Anarchy and Insecurity Will Increase On the Roads: TIBDhaka «» ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ মৌলভীবাজার পৌর শাখার বদর দিবসের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত «» ভোক্তা-অধিকার অধিদপ্তর কর্তৃক তদারকি অভিযান ও জরিমানা

বাংলা সিনেমার নায়কদের কার কত বেতন?

বিডিলাইভ রিপোর্ট :

ঢাকাই চলচ্চিত্রে নায়কদের পারিশ্রমিকের বিষয়ে অনেকেরই জানার অাগ্রহ। নতুনদের মধ্যে পারিশ্রমিক মাত্র দুই লাখ টাকা হলেও দীর্ঘদিন কাজ করেও কেউ কেউ পাচ্ছেন বড়জোর পাঁচ-ছয় লাখ টাকা।

আবার কেউ একসময় চল্লিশ লাখ পেলেও এখন পান বিশের লাখের মতো। ঢাকাই নায়কদের ছবিপ্রতি পারিশ্রমিকের একটি তথ্যচিত্র নিচে তুলে ধরা হল।

শাকিব খান: 
ঢাকাই চলচ্চিত্রে প্রায় দেড় যুগ আগে অভিষেক ঘটে শাকিব খানের। তার অভিনীত প্রথম ছবি অনন্ত ভালোবাসা। সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত এই ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন ইরিন জামান। ক্যারিয়ার শুরু থেকে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে সাত বছরের মাথায় প্রথম ব্যবসাসফল ছবি উপহার দেন শাকিব খান।

এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ঢালিউডের অন্যতম সফল ও জনপ্রিয় অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন শাকিব। ২০০৮ সালের শেষের দিকে হঠাৎ করেই দর বাড়িয়ে দেন শাকিব। ছবি প্রতি দর হাঁকেন ৪০ লাখ টাকাও।

তারকা সংকটের কারণে নির্মাতারাও একরকম বাধ্য হয়ে শাকিবের চাওয়া পূরণের চেষ্টা করে গেছেন। অবশ্য সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শাকিবের পারিশ্রমিকের অংকটা কমতে থাকে। বর্তমানে ছবি প্রতি ১৫ থেকে ২৫ লাখ টাকার মতো পারিশ্রমিক পাচ্ছেন।

অনন্ত জলিল: 
দর উঠেছে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা। কিন্তু এক কোটি না হলে কিছুতেই রাজি হবেন না তিনি। জানিয়েছেন খোঁজ-দ্য সার্চ চলচ্চিত্রের নায়ক অনন্ত জলিল। খোঁজ-দ্য সার্চ সিনেমার মাধ্যমে ঢাকাই চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে অভিষেক ঘটে অনন্তর। এখন পর্যন্ত ছয়টি সিনেমায় তাকে অভিনয় করতে দেখা গেছে।

যদিও সবগুলো ছবিরই প্রযোজক অনন্ত নিজেই। ছবি প্রতি তার সম্মানি কত ধরা হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কোনো ছবিতে এখন পর্যন্ত কোনো পারিশ্রমিক ধরিনি। বিষয়টি নিয়ে আমি আসলে ভাবিওনি। তবে দর্শকের কাছে আমার জনপ্রিয়তা কারণে কিছু নির্মাতা আমাকে দিয়ে ছবি নির্মাণের ব্যপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন।

তাদেরকে আমি সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছি, যদি এক কোটি টাকা পারিশ্রমিক দেয়া হয় তাহলে আমি ছবিতে অভিনয় করতে রাজি আছি। এদের কেউ কেউ অবশ্য ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দিতে রাজি হয়েছিলেন বলেই অনন্ত জানান।

ফেরদৌস: 
কথা ছিল সাংবাদিক হওয়ার। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিও অর্জন করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেয়া হয়নি। জড়িয়ে গেছেন বিনোদন জগতের সঙ্গে। শুরুটা হয়েছিল নব্বইয়ের দশকে, র‌্যাম্প মডেল হিসেবে। একটা সময় তার সঙ্গে পরিচয় হয় প্রয়াত নৃত্য পরিচালক আমির হোসেন বাবুর।

তার একটি ছবিতে অভিনয় করার কথা ছিল ফেরদৌসের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছবিটির কাজ শুরু করতে পারেননি আমির হোসেন বাবু। বুকের ভেতর আগুন ছবির কাজ শেষ হওয়ার আগেই মারা যান ছবির নায়ক সালমান শাহ। তার আকস্মিক মৃত্যুতে ছবিটি নিয়ে বিপাকে পড়ে যান নির্মাতা ছটকু আহমেদ। গল্পে কিছুটা পরিবর্তন এনে ফেরদৌসকে দিয়ে ছবির কাজ শেষ করেন ছটকু আহমেদ। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবির মাধ্যমে ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে ফেরদৌসের।

চলচ্চিত্রে শুরুটা হতে যত বেশি বেগ পেতে হয়েছে সফলতা লাভ করতে ততটা হয়নি। প্রথম ছবি মুক্তির বছর খানেকের মাথায় মুক্তি পায় কলকাতার নির্মাতা বাসু চ্যাটার্জি পরিচালিত হঠাৎ বৃষ্টি ছবিটি। এই ছবিটি রাতারাতি তারকা বানিয়ে দেয় ফেরদৌসকে। অর্জন করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। এই ছবির মাধ্যমে কেবল বাংলাদেশে নয়, কলকাতাতেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান ফেরদৌস। এরপর দুই বাংলায় অনেক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। এখনো আগের মতোই দুই বাংলায় সমানতালে অভিনয় করে চলেছেন। আগে ছবি প্রতি ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিলেও ইদানীং সে অঙ্কটায় ভাটা পড়েছে। এখন তাঁর পারিশ্রমিক ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার ঘরে।

আরিফিন শুভ: 
শোবিজে আরিফিন শুভর শুরু র‍্যাম্প মডেলিংয়ের মধ্য দিয়ে। পাশাপাশি রেডিওতে কথাবন্ধুর কাজও করতেন। এরপর নাটকে অভিনয় করেন। একটা সময় সব কিছুকে বিদায় দিয়ে নিজেকে চলচ্চিত্রের জন্য উপযোগী করে তোলেন। পেয়েছেন সফলতাও। তাঁর প্রথম ছবির নাম ‘জাগো’। এই ছবিতে তাঁর উপস্থিতি অল্প সময়ের জন্য হলেও, শুভ ঠিকই দর্শক হৃদয়ে স্থান করে নেন। এরপর একে একে কাজ করেন ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘ছায়াছবি’, ‘অগ্নি’, ‘কিস্তিমাত’, ‘ওয়ার্নিং’ ও ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ ছবিগুলোতে। অগ্নি ছবির সাফল্যের পর চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালকদের কাছে নির্ভরযোগ্য নায়ক হয়ে ওঠেন শুভ। কিস্তিমাত ছবিতেও বাজিমাত করেন শুভ। আর সর্বশেষ ছুঁয়ে দিলে মন ছবিটি শুভকে এনে দেয় আকাশছোঁয়া সাফল্য। শুভ বর্তমানে প্রতিটি ছবিতে অভিনয়ের বিনিময়ে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার মতো পারিশ্রমিক নিচ্ছেন।

বাপ্পি চৌধুরী: 
নারায়ণগঞ্জের ছেলে বাপ্পি চৌধুরী। কোনো দিন ভাবেননি চলচ্চিত্রে কাজ করবেন। পরিবারেও কেউ এ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। বন্ধু-বান্ধবের উৎসাহে চলচ্চিত্রে বাপ্পি চৌধুরী অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় তাঁর। রূপালি পর্দায় অভিষেকের জন্য খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি তাঁকে। ২০১২ সালে সেই সুযোগটা পেয়ে যান বাপ্পি। তাঁর প্রথম ছবি ভালোবাসার রং। এই ছবিতে তার সহশিল্পী হালের আলোচিত নায়িকা মাহি।

ভালোবাসার রং মুক্তির আগেই একাধিক ছবিতেও চুক্তি স্বাক্ষর করে বেশ আলোচিত হয়ে ওঠেন বাপ্পি। আর ছবি মুক্তির পর পেয়ে যান জনপ্রিয়তা ও তারকাখ্যাতি। মাত্র তিন বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন এক ডজনেরও বেশি ছবিতে। বর্তমানে প্রতিটি ছবিতে অভিনয়ের বিনিময়ে ৭ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকার মতো পারিশ্রমিক নিচ্ছেন।

সাইমন: 
শুরুটা করেছিলেন জ্বি-হুজুর সিনেমার মধ্য দিয়ে। সালটা ছিল ২০১২। প্রথম ছবিতে সাফল্যের মুখ না দেখলেও পরের বছর বাজিমাত করেন সাইমন। তাঁর অভিনীত পোড়ামন ছবিটি দারুণ দর্শকপ্রিয়তা পায়। ছবিটিতে সাইমন অভিনয় করেন মাহিয়া মাহির বিপরীতে। তিন বছরের ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন ১০ টিরও বেশি ছবিতে। তুলনামূলকভাবে ছবির সংখ্যা কম হলেও তাঁর পারিশ্রমিকের অঙ্কটা ভালোই বলতে হয়। বর্তমানে ছবি প্রতি ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা পাচ্ছেন তিনি।

ইমন: 
শুরুটা হয়েছিল ছোটপর্দা দিয়ে। মডেলিংয়ের পাশাপাশি অভিনয় করতেন টিভি নাটকে। ২০০৭ সালে তৌকির আহমেদ ইমন পরিচালিত দারুচিনি দ্বীপ ছবির মাধ্যমে প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ইমন। একই বছর মুক্তি পায় ইমন অভিনীত এক বুক ভালোবাসা ছবিটি। এরপর তিন বছরের বিরতি। ২০১০ সালে গহিনে শব্দ ছবিতে অভিনয় করে দর্শকমহলে প্রশংসা কুড়ান। ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া লালটিপ ছবিতেও তার অভিনয় প্রশংসিত হয়। আসছে ঈদে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে ইমন অভিনীত নতুন চলচ্চিত্র পদ্ম পাতার জল। এই ছবিতে ইমনের বিপরীতে অভিনয় করেছেন মিম। ঢাকাই ছবির আলোচিত এই নায়কের ছবি প্রতি পারিশ্রমিকের অঙ্কটা ৪ লাখের কোটায়।

নিরব: 
মডেলিংয়ের মাধ্যমে শোবিজে আসেন নিরব। টিভি নাটকেও অভিনয় করেন তিনি। তাঁর প্রথম সিনেমা মন যেখানে হৃদয় সেখানে। প্রথম ছবিতে তিনি পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছিলেন ২ লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত ঢাকাই ছবির এই নায়কের ১৯টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। কাজ চলছে আর তিন-চারটির মতো ছবির। ঢাকাই ছবির এই নায়ক ছবি প্রতি পারিশ্রমিক হাঁকাচ্ছেন ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা।

জায়েদ খান: 
পিরোজপুরের ছেলে জায়েদ খান। চলচ্চিত্রে নায়ক হওয়ার আশায় অংশ নেন এফডিসির ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমে। সৌভাগ্যক্রমে চলচ্চিত্রে কাজ করার জায়েদ খান সুযোগটাও পেয়ে যান তিনি। আর তাকে এই সুযোগটা করে দেন পিরোজপুরেরই এক প্রযোজক। ছবির নাম ভালোবাসা ভালোবাসা। পরিচালক মোহাম্মদ হান্নান। চলচ্চিত্রে জায়েদ খানের যাত্রা হলো শুরু। ২০০৭ সালে ভালোবাসা ভালোবাসা ছবিটি মুক্তি পায়। প্রথম ছবি মুক্তির আগেই জমিদারবাড়ির মেয়ে ও পাপের প্রায়শ্চিত্ত নামে আরও দুটি ছবিতে সুযোগ পেয়ে যান তিনি।

এরপর মন ছুঁয়েছে মন, আত্মগোপন, আমার স্বপ্ন আমার সংসার, তোকে ভালোবাসতেই হবে, অদৃশ্য শত্রু, কাছের মানুষ, প্রেম করব তোমার সঙ্গে, নাগ-নাগিনের স্বপ্ন ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। জনপ্রিয়তার দৌড়ে খুব বেশি পিছিয়ে না থাকলেও পারিশ্রমিকের দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে আছেন জায়েদ খান। ছবি প্রতি তাঁর পারিশ্রমিক মাত্র দুই লাখের মতো।